পাবনার আমিনপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিআইডব্লিউটিএর দালাল অফিস সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে ইজারা থেকে শুরু করে নগরবাড়ি ঘাটের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তারা পলাতক থাকায় নতুন করে এ ঘাটের লেবার হ্যান্ডেলিং চার্জ আদায়ের ইজারা পান বেড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিন্টু। তিনি কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের অনুসারী। কিন্তু কয়েকদিন ধরে ঘাটের এ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বেড়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক ফকির ও তার চাচা উপজেলা বিএনপি নেতা গণি ফকির। তারা বিএনপি নেতা ও সুজানগর-আমিনপুরের সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিবের অনুসারী। হঠাৎ সোমবার দুপুরে ঘাট এলাকার মালামাল আনা নেওয়ায় গাড়ি বন্দোবস্তকারী দালাল সমিতি অফিসে যান রাজ্জাক ফকিরসহ কয়েকজন। সেখানে উভয়পক্ষের বাকবিতণ্ডা রুপ নেয় সংঘর্ষে। উভয়পক্ষের প্রায় ১০০-১৫০ লোকের মধ্যে লোহার রড, লাঠিসোটা ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে টানা আধাঘণ্টারও বেশি সময় চলে সংঘর্ষ। এঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
Advertisement
এ ব্যাপারে রাজ্জাক ফকিরের চাচা গণি ফকির বলেন, আমি সেখানে ছিলাম না। আমাদের কেউ সেখানে নিয়ন্ত্রণ নিতে চাওয়া বা চাঁদার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ঘাটের টার্মিনাল এলাকায় কোহিনুর নামের একজন অন্যজনের থেকে ঘর ভাড়া নিয়ে দোকানদারি করে। সেটা মফি ও মিন্টুরা লিখে নেবার নামে দখলে নিয়ে কোহিনুরকে উচ্ছেদ করতে চায়। এ নিয়ে ঝামেলা চলছিল।
এ বিষয়ে জানতে ফোনকলে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও মফির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ইজারাদার মিন্টু বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনোভাবে সম্পৃক্ততা নাই। এমনকি আমি বা আমার কোনো লোকও ঝামেলা করে নাই। রাজ্জাক গ্রুপ দালাল অফিসে এসে চাঁদা চায়। দালালরা সেটা না দিতে চাইলে রাজ্জাকরা অস্ত্র বের করে। তখন ঝামেলাটা বাধে। দালাল, ব্যবসায়ী ও অন্যান্যরা তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। আমি ঘুমে থাকা অবস্থায় ফোনকলে প্রশাসন আমাকে জানালে গিয়ে দেখি সংঘর্ষ শেষ। মফি আমার আত্মীয়, তবে সে আমার সঙ্গে রাজনীতি বা ব্যবসা কিছুই করে না।
এ ব্যাপারে বিআইডাব্লিউটিএর নগরবাড়ি-কাজীরহাট-নরাদহ নদীবন্দরের পোর্ট অফিসার মো. আব্দুল ওয়াকিল বলেন, সমিতিটি আমাদের এখতিয়ার বহির্ভূত। এখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। নিজস্ব পন্থায় তারা একটি সমিতি চালায়। সেখানে কিছু একটা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে বলে জেনেছি। এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখছেন।
Advertisement
সুজানগর সার্কেলের সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল করিম বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের ঝামেলা। খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে সাধারণ টহলের বাইরে অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা রয়েছে ওই এলাকায়। সেনাবাহিনীও টহল দিচ্ছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
আলমগীর হোসাইন/আরএইচ/এমএস