চাঁদপুরের কচুয়ায় এক ভণ্ড কবিরাজের লোকনাথ মন্দির থেকে মুসলমানদের ধর্মীয় ৩টি পবিত্র কুরআন শরিফ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শুক্রবার ওই ভণ্ড কবিরাজ সঞ্চয় সরকারের (৩০) গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে জুতা মিছিল করেছেন স্থানীয় ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা। শুক্রবার কচুয়া-সাচার ভায়া গৌরীপুর সড়কের দোয়াটি গ্রামে রাস্তায় শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা এ বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি দোয়াটি হাজী বাড়ী জামে মসজিদ থেকে শুরু হয়ে, দোয়াটি বড় ব্রিজ, মবিনের দোকান, পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ গেইট প্রদক্ষিণ করে দোয়াটি জসিম উদ্দিনের দোকানের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী আ. মবিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আজম খান, আবুল কালাম, জাকির হোসেন প্রমুখ।এদিকে এলাকাবাসী জাগো নিউজকে জানান, দোয়াটি গ্রামের অনিল সরকারের ছেলে সঞ্চয় সরকার নিজ বাড়িতে লোকনাথ মন্দির নির্মাণ করে গত ৬ থেকে ৭ বছর যাবৎ বিভিন্ন রোগের কবিরাজি করে আসছেন। গত বুধবার ওই লোকনাথ মন্দিরে ৩টি পবিত্র কুরআন শরিফ, পবিত্র কাবা ও মদিনা শরীফের দৃশ্য সম্বলিত ক্যালেন্ডার দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে কচুয়া থানার সেকেন্ড অফিসার মো. নাছির উদ্দিন ওই দিন রাত ৭টার দিকে পবিত্র কুরআন শরিফ ৩টি সঞ্চয় সরকারের লোকনাথ মন্দির থেকে উদ্ধার করে দোয়াটি গ্রামের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ও ওই গ্রামের যুবক জাকির হোসেনের জিম্মায় দিয়ে আসেন। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় মুসলমানদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ওই কুরআন শরিফগুলো দোয়াটি হাজী বাড়ী মসজিদে হস্তান্তর করা হয়। শাজুলিয়া দরবার শরিফের পীর মাও. শাহ মুহাম্মদ রুহুল্লাহ শাজুলি’র মাধ্যমে একটি প্রতিবাদ কমিটি গঠন করা হয়। ওই প্রতিবাদ কমিটির নেতৃত্বে ভণ্ড সঞ্চয় সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এদিকে বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে এসআই নাছির উদ্দিন ও এসআই ওয়াজেদ আলী ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বস্ত করলে বিক্ষোভ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। তবে ২/৪ দিনের মধ্যে সঠিক বিচার না হলে পুনরায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন বলেও বিক্ষোভকারীরা জানান।দোয়াটি গ্রামের লোকমান হোসেন, আজম খান, আ. মবিনসহ আরো অনেকে জাগো নিউজকে জানান, সঞ্চয় সরকার দীর্ঘ দিন ধরে নিজেকে অলৌকিক কবিরাজ দাবি করে, কবিরাজির আড়ালে মন্দিরে পবিত্র কুরআন শরিফ রেখে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে।কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, সঞ্চয় সরকারের মন্দির থেকে কুরআন শরিফ উদ্ধার করে স্থানীয়দের মাধ্যমে মসজিদে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং মন্দিরে কোরআন শরিফ না রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।এদিকে অভিযুক্ত সঞ্চয় সরকারের বক্তব্য জানতে তার ০১৭৩১-০৫১৭৯৩ নম্বরে বার বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে শনিবার কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিলের নেতৃত্বে ওই এলাকার আলেমদের নিয়ে একটি মীমাংসা সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।ইকরাম চৌধুরী/এসএইচএস
Advertisement