ধর্ম

বিয়ে করে দাম্পত্য জীবনে সুখী হবেন যেভাবে

বিশ্বের অনেক দেশে বিয়ে-পরবর্তী দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তি বজায় রাখা সম্পর্কে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আবার অনেক দেশে বিয়ের সময় সে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সনদও দেখাতে হয়, যা দেখাতে না পারলে বিয়ে করাও সম্ভব হয় না। কেননা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করলে দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদের পরিবর্তে সুসম্পর্ক তৈরি হয়।

Advertisement

দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে হলে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই ধৈর্যশীল হতে হয়। বিয়ে সম্পর্কে ইমাম গাজালি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির একটি মতামত ও উপদেশ থেকেই তা অনুমেয়। আর তাহলো-

ইমাম গাজালি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘যেসব যুবক মনে করে যে, স্ত্রীর কটূ (তিক্ত) কথায় ধৈর্যধারণ করতে পারবে না; তাদের বিয়ে করা উচিত নয়।’

স্ত্রীরা নানা বিষয়ে কটূ কথা বলবে, এটাই চিরসত্য। এ সত্য পুরুষকে মেনে নিতে হবে। তাই স্ত্রীর কটূ কথা সহ্য করার ক্ষমতা না থাকলে কোনো পুরুষের বিয়ে করা উচিত হবে না।

Advertisement

উদাহরণ স্বরূপ তিনি উল্লেখ করেন-কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে বলল, ‘তোমার চেহারা যে মাগুর মাছের মতো তা বিয়ের আগে খেয়াল করিনি। বিয়ের আগে খেয়াল করলে তোমাকে বিয়ে করতাম না।’

স্ত্রীর এ কথা শুনেই কোনো পুরুষের ক্ষেপে ওঠা ঠিক হবে না। ওই মুহূর্তে স্ত্রীর কথা শুনে হয় চুপ থাকতে হবে নতুবা স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলতে হবে-

‘তোমার মতো চাঁদসাদৃশ্য স্ত্রী যে আমার ভাগ্যে জুটেছে এটা আমার বড় সৌভাগ্য। আর আমার চেহারা যা-ই হোক, আল্লাহর কোনো সৃষ্টিই নিন্দনীয় নয়।’

আবার যে স্বামী তাদের স্ত্রীদের কটূ কথা বলে কিংবা খারাপ আচরণ করে, সে সব স্ত্রীদের উচিত স্বামীর সঙ্গে খারাপ কথা ও কাজের জবাব উত্তম কথা ও কাজ দিয়ে দেয়া।

Advertisement

এভাবে যদি কোনো স্বামী কিংবা স্ত্রী তাদের একে অপরের কটূ কথার মূল্যায়ন করতে পারে তবেই বিবাহিত জীবনে স্বর্গের সুখ ফিরে আসবে। আর ইসলামের সুমহান শিক্ষাও তাই।

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী আবার স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে ডির্ভোস দেয়ার প্রবণতা মহামারির মতো বেড়েই চলেছে, যা ইসলাম নির্দেশিত সুখী পারিবারিক জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ থেকে উত্তরণে প্রতিটি দেশ ও সমাজে বিয়ে-পরবর্তী জীবনের সুখ-শান্তিতে করণীয়গুলো তুলে ধরতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

যদি দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকে তবে বিয়ের আগে সুখী দাম্পত্য জীবনের অধিকারী ব্যক্তি কিংবা মুরুব্বিদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি।

মনে রাখা জরুরি যে, দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তি পরিবার ও সমাজের সুখ-শান্তির অন্যতম হাতিয়ার।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব যুবককে বিয়ে-পরবর্তী দাম্পত্য জীবন শান্তিময় করে গড়ে তুলতে ইমাম গাজালি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির উপদেশ গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস