আন্তর্জাতিক

উড়ন্ত বোর্ড দিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি

পায়ের নিচে ছোট একটি বোর্ড লাগিয়ে মানুষ পাখির মতো এক জায়গা থেকে উড়তে উড়তে আরেক জায়গায় চলে যাবে; এর আগে এমন দৃশ্য বর্ণনা করা হয়েছে শুধু বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে। কিন্তু সেটা যেন এখন বাস্তব হতে চলেছে।

Advertisement

ফরাসী একজন উদ্ভাবক সেরকমটাই করে দেখিয়েছেন। পিঠে জ্বালানি-ভর্তি একটি ব্যাগ নিয়ে ছোট একটি বোর্ডের ওপর দাঁড়িয়ে গোটা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে তিনি এক দেশ থেকে চলে গেছেন আরেক দেশে।

তার নাম ফ্র্যাঙ্কি জাপাটা। বয়স ৪০। পাখিও না আবার বিমানও নয়; এ রকম যে বোর্ডের উপর দাঁড়িয়ে তিনি উড়ে গেছেন তার নাম ফ্লাইবোর্ড বা উড়ন্ত বোর্ড।

ফ্রান্সের ক্যালে শহরের কাছে সেনগাত থেকে রোববার সকাল ৬টা ১৭মিনিটে উড়ান শুরু করেন তিনি। ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে তিনি ব্রিটেনে ডোভারের সেন্ট মার্গারেট বে-তে এসে নামেন। এ সময় বহু মানুষ তাকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানায়।

Advertisement

আরও পড়ুন : কিশোরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে ২ বন্ধু, অতঃপর...

কেরোসিন-ভর্তি একটি ব্যাক-প্যাক দিয়ে চালিত এই ফ্লাইবোর্ডে করে ২২ মাইল পথ পাড়ি দিতে তার সময় লেগেছে ২২ মিনিট। এর আগে গত ২৫ জুলাইয়েও তিনি আরেকবার এভাবে চ্যানেল পাড়ি দিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তার কারণ ছিল ব্যাক-প্যাকের জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়া।

এবার আর সেই সমস্যা ছিল না। সমুদ্রের মাঝখানে একটি নৌকায় নেমে সেখানে নতুন করে জ্বালানি নিয়ে তিনি বাকিটা পথ উড়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। আগের বার জ্বালানি সংগ্রহের জন্য নৌকায় নামতে গিয়ে তিনি সমুদ্রে পড়ে গিয়েছিলেন।

বলা হচ্ছে, এই উদ্ভাবন হতে পারে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। ফ্র্যাঙ্কি জাপাটা বলেন, তিন বছর আগে আমরা একটি যন্ত্র বানিয়েছিলাম। আর এখন আমরা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে সক্ষম হলাম। এটা ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা সেবিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত নেয়ার কেউ নই। একমাত্র সময়ই সেটা বলে দিতে পারবে। এ সময় আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন : শাশুড়িকে ধর্ষণের পর স্ত্রীকে তালাকের হুমকি

জাপাটা ডোভারে নেমে বলেন, উড়তে থাকার সময় তার গতি ছিল ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত। আকাশ দিয়ে উড়ে আসার সময় তাকে তিনটি হেলিকপ্টার পাহারা দিচ্ছিল।

এর আগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বাস্তিল দিবসের কুচকাওয়াজের সময় এ ধরনের ফ্লাইবোর্ড ব্যবহার করে আকাশে নানা ধরনের কসরৎ দেখিয়ে তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। ফরাসী সামরিক বাহিনীও এ ধরনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করার কথা বিবেচনা করছে এবং এ জন্য জাপাটার কোম্পানি জেড-এয়ারকে তারা প্রায় ১৫ লাখ ডলার দিয়েছে।

ফরাসী রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লি বলেছেন, এই ফ্লাইবোর্ড দিয়ে নানা কিছু করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় উপকরণ এক জায়গা থেকে দ্রুত আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/এমএস