দেশজুড়ে

১৩ দিন লড়াই করে হার মানলেন ফুলন

১৩ দিন লড়াই করে হার মানলেন ফুলন

১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা গেলেন ফুফাত ভাইয়ের দেয়া আগুনে দগ্ধ নরসিংদীর কলেজছাত্রী ফুলন রানী বর্মণ (২২)। বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ফুলনের বাবা যোগেন্দ্র বর্মণ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

নিহত ফুলন বর্মণ বীরপুর মহল্লার যোগেন্দ্র বর্মণের মেয়ে। তিনি নরসিংদীর উদয়ন কলেজ থেকে গতবছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

গত ১৩ জুন রাতে নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুর মহল্লায় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় তারই ফুফাত ভাই ভবতোষ ও তার দুই বন্ধু আনন্দ ও রাজু। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তার শরীরে আগুন দেয় বলে স্বীকার করেন পুলিশের কাছে গ্রেফতার রাজু সূত্রধর।

জানা গেছে, ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফুলন বর্মণ কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাতনামা দুই দুর্বৃত্ত তার হাতমুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে কেরোসিন ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

Advertisement

এ ঘটনায় তার বাবা যোগেন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে ডিবি উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদে সঞ্জিবসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাজু সূত্রধর নামে একজনকে গ্রেফতার করে। রাজুর তথ্যমতে ফুলনের ফুফাতো ভাই ভবতোষ ও আনন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের কাছে আগুন দেয়ার কথা স্বীকার করেন রাজু।

জবাবন্দিতে রাজু জানান, ভবতোষের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাজু সূত্রধর ও আনন্দ বর্মণ। ফুলনের বাবা যোগেন্দ্রর সঙ্গে প্রতিবেশী সুখ লাল ও হিরা লালের বাড়ির জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে এলাকায় সালিশ হয়েছে। ঘটনার দুই দিন আগে ১১ জুন ভবতোষ ও তার মামী (ফুলনের মা) এর সঙ্গে ঝগড়া হয় সুখ লালের। এ ঝগড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ফুলনের মা বলেন এখানে থাকব না। দরকার হয় জমি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাব। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পনা করে কলেজছাত্রী ফুলনের ভাই ভবতোষ।

রাজু আরও জানান, ঘটনার দিন ভবতোষ তার বন্ধু রাজু সূত্রধর ও আনন্দ বর্মনকে নিয়ে বীরপুর রেললাইনে বসে নিজের বোনকে আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী মামাতো বোন ফুলন কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ফুলনের মাথায় ও শরীরে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় ভবতোষ। আগুন দেয়ার পর ভবতোষ, আনন্দ একদিক দিয়ে ও রাজু অন্যদিক দিক দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

সঞ্জিত সাহা/এফএ/জেআইএম

Advertisement