কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন পাহাড়ের জেলেরা। পাশের জেলা রাঙ্গামাটির মৎস্যজীবীরা ভিজিডি ও ভিজিএফের আওতায় রেশন সুবিধা পেলেও সে সুবিধা থেকেও বঞ্চিত খাগড়াছড়ির মহালছড়ির মৎসজীবীরা। ফলে রোজগার না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন মহালছড়ির জেলে পরিবারগুলো। সরকারি সুবিধাবঞ্চিত জেলে পরিবারগুলোতে চলছে হাহাকার।
Advertisement
কাপ্তাই হ্রদে প্রাকৃতিক প্রজননের মাধ্যমে মাছের বংশ বৃদ্ধি ও অবমুক্ত পোনার যথাযথ সংরক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাছ ধরা, বিপণন ও পরিবহন বন্ধে ১ মে থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যা চলবে আগামী ৩১ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। ১৯৬০ সালের কাপ্তাই বাঁধের পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা চলে পার্বত্য খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার দুই হাজারেরও বেশি জেলে পরিবারের।
মহালছড়ি মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রে প্রতিবছর সরকারের রাজস্ব আয় বাড়লেও বাড়েনি জেলে পরিবারগুলোর সুযোগ-সুবিধা। চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থ-বছরেও মহালছড়ি উপকেন্দ্রে সরকার ৮৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৮১ টাকা রাজস্ব আয় করেছে বলেও জানা গেছে।
তাই মাছ শিকার বন্ধকালীন পাশের জেলা রাঙ্গামাটির মতো অবিলম্বে সরকারিভাবে রেশনিং সবিধা চালুর দাবি জানিয়েছেন মহালছড়ির জেলেরা। তারা বলেন, ‘মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছি। আমরা কার্ড পাওয়ার পরও খাদ্য সহায়তা পাচ্ছি না।’
Advertisement
মহালছড়ি মৎস্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন মাছ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল খায়ের বলেন, জেলেরা সারা বছর মাছ ধরেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। বছরে মে থেকে জুলাই তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এই সময়টাতে জেলেরা খুব কষ্টে থাকেন। তাই মাছ ধরা বন্ধকালীন তাদেরকে ভিজিডি বা ভিজিএফের আওতায় খাদ্য সহায়তা প্রদানের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বারবার আবেদন করেও কোনো সাড়া মেলেনি জানিয়ে মহালছড়ি মৎস্য উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা নাসার উল্যাহ আহমেদ বলেন, ভিজিডি ও ভিজিএফের আওতায় খাদ্য সহায়তা না পাওয়া দুঃখজনক। এ পরিস্থিতিতে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালীন তাদেরকে মাছধরা থেকে বিরত রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মাছ ধরা বন্ধকালীন রেশন পাওয়ার জন্য জেলেরা আমার কাছে আবেদন করেছেন। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এফএ/এমএস
Advertisement