দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীদের জীবন বীমা সুবিধার আওতায় আনার ঘোষণা দিলো সরকার। অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো আ হ ম মুস্তফা কামালের দেয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ ঘোষনা দেন তিনি।
Advertisement
আরও পড়ুন : বীমার আওতায় যেসব সুবিধা পাবেন প্রবাসীরা
‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি ক্ষমতাসীন সরকারের চলতি মেয়াদের প্রথম এবং দেশের ৪৮তম বাজেট।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি যতটুকু পড়তে পেরেছি বাকিটুকু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। উনি পড়ে দেবেন।’
Advertisement
পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতিক্রমে বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বক্তৃতায় বলা হয়, প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বীমা সুবিধা না থাকায় দুর্ঘটনা ও নানাবিধ কারণে তারা ও তাদের পরিবার প্রায়শই আর্থিক ক্ষতি ও ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। প্রবাসী কর্মীদের বীমা সুবিধার আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। শুরুতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট প্রস্তাব পাঠ করলেও পরে তিনি অসুস্থ বোধ করায় তার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট পড়ে শোনান।
জানা গেছে, প্রবাসীদের জীবন বীমা সুবিধার আওতায় আনতে একটি খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভিাগ। এ নীতিমালার আওতায় বীমাকারী মৃত্যুবরণ করলে, দুর্ঘটনাজনিত স্থায়ী ও সম্পূর্ণ অক্ষমতা বা পঙ্গুত্ববরণ করলে মূল বীমার শতভাগ পরিশোধ করার বিধান রাখা হয়েছে। অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের ভিত্তিতে দাবি পরিশোধ করার কথাও বলা হয়েছে।
Advertisement
খসড়া নীতিমালার শুরুতেই বলা হয়েছে, প্রবাসী কর্মীদের বীমা সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের বীমা সুবিধার প্রয়োজনীয়তা, কর্মীদের আর্থিক সক্ষমতা, কর্মকালীন সম্ভাব্য ঝুঁকিসহ অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয় বিবেচনায় আনা হয়েছে।
বীমার প্রকারভেদের ক্ষেত্রে বলা হয়, এ নীতিমালার আওতায় প্রবাসী কর্মীদের জীবন বীমা সুবিধা প্রদান করা হবে।
সাধারণত মৃত্যুর ক্ষেত্রে বীমা সুবিধায় প্রিমিয়াম হার ও বীমা অঙ্ক বীমা গ্রহিতাদের বয়সভেদে পার্থক্য হয়ে থাকে। তবে প্রবাসী কর্মীদের একটি গ্রুপ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বীমা পরিকল্পটি বা পলিসিটি সহজীকরণের লক্ষ্যে বীমা গ্রহিতাদের বয়স নির্বিশেষে অভিন্ন প্রিমিয়াম হার আরোপ করা হবে।
তাছাড়া এ সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনার পর বিদেশগামী কর্মীদের প্রয়োজনীয়তা ও আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় নিয়ে ৫ লাখ ও ২ লাখ টাকা বীমা অঙ্কের দুটি পরিকল্প বা পলিসি ডিজাইন করা হয়েছে। বীমা চলাকালীন যেকোনো কারণে বীমাগ্রাহক মৃত্যুবরণ করলে তার বৈধ উত্তরাধিকারীকে বীমা অঙ্কের শতভাগ পরিশোধ করা হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
এমইউএইচ/এসএইচএস/এমকেএইচ