সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে ভেঙে যাওয়া বিয়ের ভূক্তভোগী হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে প্রায় ৪২ লাখ টাকা দাক্ষিণ্য হিসেবে তুলেছেন এক নারী। সন্তানদের লালন-পালনের জন্য অনলাইনে সবার কাছে অর্থ সহায়তার অনুরোধ করেছিলেন। মানুষ সরল বিশ্বাসে তাকে মাত্র ১৭ দিনে দিয়েছে ৪২ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ টাকা।
Advertisement
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে স্বামী যখন স্ত্রীর এমন ন্যাক্কারজনক কাণ্ড জানতে পারেন তখন। বন্ধুরা ওই ব্যক্তিকে জানান, তার স্ত্রী সন্তানদের ছবি অনলাইনে দিয়ে অর্থ ভিক্ষা চেয়ে পোস্ট করছে গত কয়েকদিন ধরে। কিন্তু স্বামীর নজরে পড়েনি।
পরে স্ত্রীর ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ওয়ালে গিয়ে অবাক হয়ে যান স্বামী। সন্তানদের হেয় ও মানুষের কাছে ছোট করার অভিযোগ এনে স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন ওই ব্যক্তি। পুলিশ তদন্তে নেমে মানুষের সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণ পাওয়ার পর ওই নারীকে গ্রেফতার করেছে।
গত রমজানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে এ ঘটনা ঘটে। রমজানে এ রকম অন্তত ১২৮ জন অনলাইন ভিক্ষুককে গ্রেফতার করেছে দুবাই পুলিশ।
Advertisement
দুবাই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জামাল সালেম আল জাল্লাফ বলেন, সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য ভিক্ষা করতে ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন এক নারী। তার স্বামী আরব উপসাগরীয় একটি দেশের নাগরিক। দুবাই পুলিশের ই-ক্রাইম শাখায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
তদন্তে দেখা যায়, সন্তানদের লালন-পালনের জন্য অনলাইনে মানুষের কাছে অর্থ সহায়তা চেয়েছিলেন ওই নারী। তিনি আসলে অনেক বছর ধরেই স্বামীর সঙ্গে সংসার করে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তিনি সন্তানদের ছবিও প্রকাশ করেন।
পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তির কিছু আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু সন্তানদের ছবি অনলাইনে প্রকাশ করে তার স্ত্রী ভিক্ষা চাইছেন বলে জানান। শিশুদের অবমাননা ও তাদের সম্মানহানি করে মাত্র ১৭ দিনে ওই মা ৫০ হাজার ডলার ভিক্ষা সহায়তা পান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এ ধরনের ভিক্ষুকের প্রতি সহানুভূতি না দেখাতে আমিরাতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা আল জাল্লাফ।
Advertisement
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে ভিক্ষাবৃত্তি দণ্ডনীয় অপরাধ। ভিক্ষার ধরন ভেদে ভিক্ষুককে ৩ থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয় আমিরাতে।
সূত্র : খালিজ টাইমস।
এসআইএস/পিআর