জাতীয়

উদ্ধার অভিযানে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা উৎসুক জনতা

রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফআর টাওয়ারে আগুন লেগেছে। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের পরপরই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। এমনকি হেলিকপ্টারেও চলছে উদ্ধারকাজ। এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এফআর টাওয়ারের নিচে ভিড় জমাতে শুরু করে উৎসুক জনতা। তাদের কেউ ছবি তুলছেন কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। কেউ আবার আসছেন লাইভে। তাদের কারণে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের। ওই ভবনে আটকে পড়া মানুষের স্বজনরাও ভিড় জমিয়েছে নিচে। জনতার ভিড়ে তারাও পড়ছেন বিপাকে।

কামাল আতার্তুক রোড থেকে গুলশানগামী সড়ক, মূল রাস্তাসহ পুরো রাস্তায় মানুষ আর মানুষ। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাঁশি বাজিয়ে ও অনুরোধ করেও তাদের সরাতে পারছেন না। পাঁচ শতাধিক সেনা সদস্য, পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে সাধারণ মানুষের মধ্য থেকেও অনেককে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিতে দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ দিয়ে অযথা পানি বের হতে দেখলেই তারা সেখানে জোড়াতালি দিয়ে আটকাচ্ছেন। পানি নষ্ট হতে দিচ্ছেন না। কেউ কেউ আবার পানির পাইপ কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করছেন।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শী, গণমাধ্যম কর্মী ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের বর্ণনা মতে, যেসব উৎসুক জনতা কোনো কারণ ছাড়াই দাঁড়িয়ে কেবল ছবি তুলছেন ও তাকিয়ে দেখছেন উদ্ধার তৎপরতায় তারাই বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন। চাইলে তারা প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করতে পারতেন না হলে জায়গাটা ফাঁকা রেখে উদ্ধারকাজ নির্বিঘ্ন করতেও সহায়তা করতে পারতেন।

এদিকে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

ঘটনাস্থলে ভিড় করা উৎসুক জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, এখান থেকে সরে যান। এখানে অযথা ভিড় করবেন না। এতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা স্বাভাবিকভাবে তাদের কাজ করতে পারছে না। আপনারা তাদের সহযোগিতা করুন। এখান থেকে সরে যাওয়াটাই সহযোগিতা।'

মেয়র আরও বলেন, 'এখানে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধারকাজ করছে। আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আশা করছি, দ্ররুতই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।'

Advertisement

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুনের শিখা কিছুটা কমে এসেছে। তবে বেড়েই চলছে ধোঁয়ার পরিমাণ। দমকল বাহিনীর সদস্যরা ভবনের ভেতরে অক্সিজেন দেয়ার চেষ্টা করছেন।

অগ্নিকাণ্ডে ইতোমধ্যে কয়েকজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জেইউ/এসএইচএস/এমকেএইচ