প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নসিহত মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ। যে বা যারা এ উপদেশ মেনে চলবে, দুনিয়া ও পরকালের নাজাতের জন্য তাই যথেষ্ট।
Advertisement
মানুষ মনে প্রাণে একনিষ্ঠতার সঙ্গে যা চাইবে, তাৎক্ষনিকভাবে তা না পেলেও দেরিতে হলেও তা পাবে। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের ঘোষণাও তাই। তাই দুনিয়াতে স্বচ্ছল ও সাবলম্বী জীবন লাভ করতে চাইলে প্রতি কাজেই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকা আবশ্যক। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি বর্ণনা করেন-
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আনসারদের কিছু ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে সাহায্যের আবেদন করলেন। তিনি তাদেরকে সাহায্য করলেন।
তাঁরা আবার সাহায্য চাইলো। তিনি (আল্লাহর রাসুল) আবারও তাদের দান করলেন। এমনকি তাঁর নিকট যা কিছু ছিল, তা সবই নিঃশেষ হয়ে গেলো।
Advertisement
এভাবে হাতের সবকিছু দান করার পর তিনি আনসারদের ওই ব্যক্তিদের বললেন, ‘আমার কাছে যে ধন-সম্পদ আসে তা আমি তোমাদেরকে না দিয়ে সঞ্চয় করে রাখি না।জেনে রেখো!-> যে ব্যক্তি পবিত্র হতে চায়, আল্লাহ তাকে পবিত্রই রাখেন।> যে ব্যক্তি কারো মুখাপেক্ষী হতে চায় না, আল্লাহ তাকে সাবলম্বী করে তোলেন।> যে ব্যক্তি ধৈর্য অবলম্বন করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীলতা দান করেন।ধৈর্যের চাইতে উত্তম ও প্রশস্ত আর কোনো জিনিস কাউকে দেয়া হয়নি। (বুখারি ও মুসলিম)
এ হাদিসে প্রিয়নবি মানুষের বেশ কিছু মানবিক দুর্বলতার বিষয় তুলে ধরেছেন। যেসব দুর্বলতার কারণে মানুষ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌছে যায়।
এক মুমিন অন্য মুমিনের কাছে সাহায্য চাইলে তার সাহায্য-সহযোগিতা করাই হলো হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা। কোনো মুমিন বান্দা যদি একাধিকবার সহযোগিতা কামনা করে, সম্ভব হলে তাই করা। কেননা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ততক্ষণ পর্যন্ত সাহায্য দেয়া অব্যাহত রেখেছেন যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনার জিনিস মজুদ ছিল।
কোনো মুসলিম শাসক কিংবা মুসলমান নেতার এ কাজ উচিত নয় যে, তার কাছে অঢেল সম্পদ গচ্ছিত থাকা স্বত্ত্বেও তার কোনো প্রতিবেশি অভাব-অনটনে, অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করবে। বরং তার দায়িত্ব হলো সামর্থ্য অনুযায়ী অভাবি প্রতিবেশির জন্য অবিরাম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রাখা। বান্দার সাহায্যে আল্লাহ তাআলা সম্পদে বরকত দান করেন।
Advertisement
সুতরাং দানশীল কিংবা দান করার সদ্বিচ্ছা আছে যার, তার জন্য শিক্ষণীয় ৩টি বিষয় হলো-> কোনো ব্যক্তি পবিত্র হতে চাইলে আল্লাহ তাআলা তাকে পবিত্র করেন। তা জীবনের সর্বক্ষেত্রেই হতে পারে। এমনটিই দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রিয় নবি।> আবার কোনো বান্দা যদি অগাধ পরিশ্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হতে চায় তবে আল্লাহ তাআলা তাকে পরমুখাপেক্ষী থেকে হেফাজত করেন এবং সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলেন। এটিও প্রিয় নবির পবিত্র ঘোষণা।> আর যে ব্যক্তি চরম বিপদ ও মুসিবতে সবর বা ধৈর্যধারণ করতে চায়। আল্লাহ তাআলা অসংখ্য সমস্যার মাঝেও তাকে ধৈর্যধারণকারী হিসেবে কবুল করে নেন।
আর এসব গুণ ও যোগ্যতা অর্জনের জন্য শক্তিশালী সর্বোত্তম মাধ্যম হলো ধৈর্যের সঙ্গে নিরলস পরিশ্রম ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। ধৈর্য থাকলে দুনিয়াতে মানুষের জন্য কোনো কাজই অসাধ্য নয়। শুধু প্রয়োজন একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা। তবেই আল্লাহ তাআলা মানুষকে প্রত্যেক কাজে সফলতা দান করেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে সর্বাধিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সব সমস্যা মোকাবেলা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস