আল্লাহ তাআলার কাছে মানুষের অন্তরের গোপন প্রকোষ্ঠের সব খবর প্রকাশমান। তিনি সব কিছু জানেন। এমনকি মানুষ যা মুখে প্রকাশ করে না, শুধু অন্তরে চিন্তা করে তাও তিনি জানেন। কুরআনের এ ঘোষণার উপলব্দিই সহজে আল্লাহর কাছে ক্ষমা লাভ ও নৈকট্য অর্জনে সহায়ক।
Advertisement
‘আল্লাহ মানুষের সব কাজ দেখেন এবং সব কথা শুনেন’ কুরআনের এ সব ঘোষণা ও সতর্কতা মানুষের মুক্তি ও সফলতার জন্যই বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। যাতে মানুষ অন্যায় অপরাধ থেকে বিরত থাকে।
মানুষ যখন এ কথা চিন্তা করবে যে, আল্লাহ তার কর্মকাণ্ড দেখছেন; তখন আর অন্যায় কাজ সংঘটিত হবে না। মানুষের প্রতিটি কাজে জবাবদিহিতার মানসিকতা তৈরি করতেই মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে এ ঘোষণা দেন-
‘তিনি জানেন তোমাদের (বান্দার) চোখের চুরি এবং তোমাদের অন্তরের গোপনতম প্রকোষ্ঠে যে ভাবনা আসে, তা সম্পর্কেও তিনি সম্পূর্ণ অবগত। (সুরা মুমিন : আয়াত ১৯)
Advertisement
যখনই মানুষ এ আয়াত নিয়ে চিন্তা করবে, তখনই সহজে আল্লাহর ক্ষমা লাভ এবং নৈকট্য অর্জনে এ অবস্থাগুলো সৃষ্টি হবে-
> কোনো ধরনের অন্যায়, জুলুম, অত্যাচার, চুরি, মিথ্যা, গিবত করা সম্ভব হবে না। কারণ মানুষ চিন্তা করবে যে, তার সব কর্মকাণ্ড আল্লাহ তাআলা দেখছেন।
> গভীর রাতের দুনিয়ার সব কোলাহল বন্ধ হয়ে গেলে মানুষের অন্তরে জীবনের ঘটে যাওয়া সব ভালো ও মন্দ কথা ভেসে ওঠে; এ আয়াতের স্মরণে বান্দা অন্যায়ের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়; আর ভালো কাজের জন্য শুকরিয়া আদায় করে।
> শয়তান মানুষকে আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগি থেকে ফিরিয়ে রাখতে আরাম-আয়েশ ও অলসতার সব উপকরণ বাড়িয়ে দেয়। যখনই মানুষ এ আয়াতের স্মরণ করে তখন শয়তান আর মানুষকে ধোঁকা দিতে পারে না। তখনই মানুষ তাহাজ্জুদে আত্মনিয়োগ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
Advertisement
ফলে এ আয়াতের স্মরণে মানুষ আল্লাহর কাছে ক্ষমা লাভ করে নৈকট্য অর্জনে সফলতা হয়। মানুষ সঠিক পথে সন্ধান পায়। সঠিক পথের সন্ধান লাভ মানুষের জন্য মহান আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ।
সে কারণেই মানুষের উচিত বেশি বেশি তাওবা ইসতেগফার করা। সুরা মুমিনুনের সর্বশেষ আয়াত বেশি বেশি পড়া। কেননা সে আয়াতে রয়েছে ক্ষমা ও রহমত লাভের আহ্বান-
رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা আরহামুর রাহিমিন।’
অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের প্রতি আপনার ক্ষমা ও রহমত দান করুন। এবং আপনি দয়া প্রদর্শনকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম দয়ালু।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় তাঁর এ বাণী ‘তিনি জানেন তোমাদের (বান্দার) চোখের চুরি এবং তোমাদের অন্তরের গোপনতম প্রকোষ্ঠে যে ভাবনা আসে, তা সম্পর্কেও তিনি সম্পূর্ণ অবগত।’ অন্তরে জাগ্রত ও উপলব্দি করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের সফল জীবন লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ