আন্তর্জাতিক

হামলাকারীকে ঠেকাতে দিলেন প্রাণ, বীরের খেতাব পাচ্ছেন রশীদ

ক্রাইস্ট চার্চের মসজিদে হামলাকারী বন্দুকধারীকে ঠেকাতে প্রাণ হারানো পাকিস্তানি নাগরিক নাইম রশিদকে বীরের খেতাব দিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। তাকে মরণোত্তর জাতীয় সম্মানে ভূষিত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

Advertisement

গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৯ পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন; ৪৯ বছর বয়সী নাইম রশিদ তাদের একজন।

রোববার টুইটারে দেয়া এক বার্তায় ইমরান খান বলেন, শেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী সন্ত্রাসীকে ঠেকাতে গিয়ে শহীদ মিয়া নাইম রশীদের জন্য পাকিস্তান গর্বিত। জাতীয় পুরস্কারের মাধ্যমে তার সাহসের স্বীকৃতি দেয়া হবে। ক্রাইস্টচার্চে নিহত পাকিস্তানিদের পরিবারকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন : এবার অস্ট্রেলিয়ায় মসজিদে গাড়ি হামলা

Advertisement

পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে জন্ম রশিদের। ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে হামলাকারী বন্দুকধারীকে ঠেকাতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু নির্বিচারে ছোড়া গুলির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত রশীদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে মারা যান।

আল নূর মসজিদে শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেন্টনের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন রশিদের ২১ বছর বয়সী ছেলে তালহা নাইম। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, নিহত দু'জনকে ক্রাইস্টচার্চে দাফন করা হবে। তাদের দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুন : এবার বোমা আতঙ্ক, নিউজিল্যান্ডে বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা

১৫ মার্চ জুমআর নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের আল নূর ও লিনউদ মসজিদে অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত শেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট বন্দুক হামলা চালায়। এতে ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আহত আরো ৪৯ জন।

Advertisement

নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, সৌদি আরব, মিসর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার নাগরিক রয়েছেন। আধুনিক নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।

পাকিস্তান থেকে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমানোর পর ক্রাইস্টচার্চে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেছিলেন রশিদ। তার ছেলে তালহা নাইম সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছিলেন। রশীদের স্ত্রী আমব্রিন বলেন, আমার স্বামী এবং আমার ছেলে হলো বীর।

আরও পড়ুন : মাথায় ডিম ভাঙার পর সিনেটরের বিরুদ্ধে মামলা ও বহিষ্কারের দাবি

তারা এই মসজিদে সব সময় যেতো। আমি এখনো বুঝতে পারছি না কেন এই হামলা হলো। কিন্তু আমি জানি আমার স্বামী একজন বীর। তিনি সবসময় মানুষকে সহায়তা করতেন; এমনকি তার মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও। সেই সময় তিনি মানুষকে বাঁচানোর জন্য সম্ভাব্য সব চেষ্টা করেছিলেন।

হামলার লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারীকে ঠেকানোর চেষ্টা করছেন রশীদ। বিশ্বের মানুষ তাকে বীর হিসেবে মনে রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন রশীদের শ্যালিকা নাইমা খান।

এসআইএস/পিআর