কৃষি ও প্রকৃতি

নওগাঁয় চরে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

নওগাঁয় ছোট যমুনা নদীর চরে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। পরিশ্রম ও খরচ কম হওয়ায় নদীর চরে বেড়েছে আলু চাষ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগ কম হওয়ায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। আগামী বছরও আবহাওয়া ভালো থাকলে বেশি বেশি আলু চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

Advertisement

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবছর ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে উন্নত উপশি জাতের কাটিনাল, ডায়মন্ড ও অ্যারিস্টরি জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ষাইটা, লাল ও সাদা পাপড়ি আলু চাষ হয়েছে। এরমধ্যে মান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ৩শ হেক্টর, সদরে ২ হাজার ৫২০ হেক্টর, বদলগাছী ৩ হাজার ১০ হেক্টর, রানীনগর ১ হাজার ৩৮ হেক্টর, আত্রাইয়ে ২ হাজার ৮শ হেক্টর, মহাদেবপুরে ১ হাজার ৩৬০ হেক্টর, পত্নীতলায় ১ হাজার ৮৭০ হেক্টর, ধামইরহাটে ২ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর।

> আরও পড়ুন- চকরিয়ায় বাড়ছে সবজি চাষ

জানা যায়, জেলার বদলগাছী উপজেলার এনায়েতপুর ও নাজিরপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট যমুনা নদী। নদী ভাঙনের পর বর্তমানে নদীর বুকে চর জেগেছে। এ চরে এখন পলি পড়ে হয়েছে বেলে-দোঁআশ মাটি। ফলে এলাকার কৃষকরা এখন নদীর চরে আলু চাষ করছেন। অন্য জমিতে যেখানে বিঘাপ্রতি ৯-১০ হাজার টাকা খচর ও বিঘাপ্রতি ৫০ মণ হারে ফলন হয়, সেখানে চরের মাটিতে ২-৩ হাজার টাকা কমে ৭০-৮০ মণের মতো ফলন হয়ে থাকে। বদলগাছী, মান্দা, রানীনগর ও আত্রাই উপজেলার চার হাজার হেক্টর নদীর চরে আলু চাষ করা হয়েছে।

Advertisement

এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন যেখানে আলু চাষ করা হচ্ছে, গত ১৫-২০ বছর আগে সেখানে আবাদি জমি ছিল। নদী ভাঙনের ফলে সেগুলো ভেঙে এখন চর হয়ে গেছে। গত ৩-৪ বছর ধরে এ চরে আলু চাষ করা হচ্ছে।’

> আরও পড়ুন- বরই চাষে ১০ লাখ টাকা আয়

কৃষক জুয়েল হোসেন, ইসরাফিল হোসেন, জুলফিকার আলী ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রতিবছর আলুর পেছনে কীটনাশকে প্রায় ৩ হাজার টাকার মতো খরচ করতে হতো। এবছর রোগ না থাকায় বিঘাপ্রতি প্রায় হাজার টাকার মতো কীটনাশক কম কিনতে হয়েছে। এছাড়া চরের মাটিতে হালচাষ, সার ও ওষুধ কম লাগে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন ক্ষতি না হলে আলুর ভালো ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।’

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বাড়তি ৫শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ এবং প্রণোদনা দেওয়ায় আলু চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকরা ফলনও ভালো পাবেন।’

Advertisement

আব্বাস আলী/এসইউ/পিআর