প্রবাস

‘৭ বছরেও আসেনি সেই ৪৮ ঘণ্টা’

আজ থেকে সাত বছর আগে নৃশংসভাবে নিজ বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। সেই ভয়ংকর হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পার হলেও তদন্ত এক জায়গায় থমকে আছে। কোনো অগ্রগতি নেই। তবে এখনও আশাবাদী তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে। সাত বছর অতিক্রম হলেও সেই ৪৮ ঘণ্টা আজও হয়নি।’ রহস্যের মাঝে এত সময় পার তবুও অপরাধীরা অধরা রয়েছে গেছে।’

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলা নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠনসহ প্রবাসী গণমাধ্যমকর্মীরা। অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন বক্তারা। ইউরোপে সাংবাদিকদের বৃহৎ ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের আয়োজনে স্থানীয় সময় রাত ৯টায় রাজধানী রোমের রসই রেস্টুরেন্টে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনটির সহ-সভাপতি ও লন্ডন থেকে প্রচারিত চ্যানেল এসে’র রোম প্রতিনিধি রিয়াজ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জমির হোসেনের পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বাংলাভিশন ইউরোপ প্রতিনিধি ফায়সাল আহমেদ দ্বীপ।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক বান্ধব উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে যা সত্যিই অনাকাঙ্খিত। সাংবাদিকরা লেখনির মাধ্যমে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করে পাশাপাশি সাংবাদিক ও প্রশাসন উভয়কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে দুর্নীতি রোধে জোরালো ভূমিকা পালন করছে।’

এরপরেও কেন সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। বক্তারা বলেন, ‘ইতোমধ্যে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সপ্তম বার্ষিকী পার হয়ে গেছে তবুও এর কোনো বিচারকার্য সম্পন্ন হয়নি। কবে হবে তারও সঠিক উত্তর কারো জানা নেই।’

বক্তারা জানান, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার (সাগর) ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা (মেহেরুন রুনি) দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। খুন হওয়ার পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

এ সময় ফটোসাংবাদিক আরিফুল হক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সভায় বহির্বিশ্বে কমিউনিটির উন্নয়নে সাংবাদিকদের করণীয় বিষয় নিয়ে আলেচনা করা হয়ে।

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনি দম্পতিকে ঢাকায় তাদের বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনা তখন সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে। বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের সাত বছরেও গোয়েন্দারা তাদের তদন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি।

‘এই হত্যাকাণ্ডে ৮ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন-রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তা কর্মী হুমায়ুন কবির, ডা. নিতাই হত্যা মামলায় গ্রেফতার রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। এদের মধ্যে তানভীর এবং পলাশ জামিনে মুক্ত আছেন।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও হাত-পা বাঁধার রশিসহ বিভিন্ন আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন ২১ জন এবং গ্রেফতার ব্যক্তিদের ডিএনএ নমুনাও পাঠায় র‌্যাব। সেই পরীক্ষার রিপোর্টও পেয়েছে তারা। তারপরও কোনো আসামিকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি তদন্তকারী এ প্রতিষ্ঠানটি।

এমআরএম/এমকেএইচ