অর্থনীতি

‘কৃষিপণ্য রপ্তানি ৫ বিলিয়ন করা সম্ভব’

২০২৭ সালের মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে কাজ করছে দেশের এ খাতের উদ্যোক্তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে এ রপ্তানি ৫ বিলিয়নে নেওয়াও সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ১০ম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বসুন্ধরায় তিন দিনব্যাপী (আইসিসিবি) মেলা শুরু হয়েছে।

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, এ কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বছর এ খাতের ১১ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে রপ্তানি বিলিয়ন ডলার হবে। আপনারা (উদ্যোক্তারা) এটা দুই বছরের মধ্যে ২ বিলিয়ন করতে চান। আমি মনে করি, সম্ভাবনার বিবেচনায় আরও বড় টার্গেট নিতে হবে। আমি চাই ২০৩০ সালে এ রপ্তানি ৫ বিলিয়ন হোক।

তিনি বলেন, বড় রপ্তানির টার্গেট নিন, সেজন্য ইপিবি সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে। যে কোনো সহায়তা, বিদেশ বা অন্য কোনো সরকারি দপ্তরের সঙ্গে রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজনে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।

Advertisement

তিনি কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেন, আমাদের এ খাতগুলোর পণ্যের প্রসার আরও বিস্তৃত করতে হবে। আমি সম্প্রতি গালফ ফুড ফেয়ারে গিয়ে আপনাদের পণ্য দেখেছি, রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের আরও ভিন্নতা দরকার। দেশে একই ধরনের পণ্য নিয়ে সব কোম্পানি প্রতিযোগিতা করে, সেটা না করে নিজস্ব ইউনিক পণ্য তৈরিতে মনোযোগী হওয়া দরকার।

আরও পড়ুন

ওমানে গিজার রপ্তানি শুরু করলো আরএফএল কৃষকদের আশার আলো দেখাচ্ছে ক্যাপসিকাম হলুদ রঙের ফুলকপিতে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা ফেনীতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বোরো ধান চাষ

মেলা কমিটির চেয়ারপারসন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি দুই বছরে দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এটা কঠিন নয়, আমাদের প্রতিটি কোম্পানির যে বিশেষত্ব, পণ্য বৈত্রিচ্য, প্রযুক্তি ও দক্ষ জনবল রয়েছে, তারা সেটা করতে পারবেন। সেজন্য আরও বেশি বেশি সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সরকার সম্প্রতি আমাদের সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে, এজন্য ধন্যবাদ। আশা করছি, এ পণ্য রপ্তানি বাড়াতে আরও সহায়ক হবে।

Advertisement

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তেনিও আলেসান্দ্রো, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর থিজ উডস্ট্রা, চীনা দূতাবাস বাংলাদেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর সঙ ইয়াং উপস্থিত ছিলেন।

আহসান খান চৌধুরী বিদেশি অতিথিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা সব সময় এ দেশের ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছেন। অন্য দেশের তুলনায় বরং এ দেশকে বেশি অগ্রাধিকার দেন। আসুন আমাদের সঙ্গে আরও ব্যবসা বাড়ান। এ দেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করুন। বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত দেশ। আমরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি।

বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, ফুডপ্রোতে এবার ২২টি দেশের ২০০’র বেশি প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য এবং সেবা প্রদর্শন করবে। এছাড়া প্রচুর বিদেশি ক্রেতা এবার মেলায় অংশ নেবে বলে আমরা আশা করছি। কারণ এ বছর আমরা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সহযোগিতার প্রায় প্রতিটি দেশের অ্যাম্বাসির মাধ্যমে সেসব দেশের ব্যবসায়ীদের জানিয়েছি। আশা করছি, কয়েকগুণ বেশি সাড়া পাবো।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. ইকতাদুল হক, অ্যাগ্রো বাংলাদেশে এক্সপোর আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, রীমস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চাঁনমোহন সাহাসহ বাপার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

দেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশিল্পের সবচেয়ে বড় এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। এই মেলায় প্রদর্শনী ছাড়াও কারিগরি সেশন যেখানে দেশ-বিদেশের এ খাতের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ম্যাচিং সেশনের ব্যবস্থা থাকবে এই মেলায়।

মেলায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চায়না, জার্মানি, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় ২২টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য এবং সেবা প্রদর্শন করবে।

বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসর’স অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এবং রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের (রীমস) যৌথ উদ্যোগে এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে।

এনএইচ/এমআরএম/এমএস