অর্থনীতি

শেষ দিনেও বাণিজ্য মেলায় হকারের উৎপাত

২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রথম দুই সপ্তাহে হকার প্রায় ছিলই না। তবে মেলার অর্ধেক সময় পার হতে না হতেই প্রবেশ করতে শুরু করে হকাররা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে হকারের সংখ্যা। শেষ দিনেও মেলায় দেখা যায় হকারের উৎপাত।

Advertisement

অভিযোগ রয়েছে, মেলার গেটে দায়িত্বে থাকা এক শ্রেণির কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হকারদের মেলায় প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছেন। এ জন্য প্রত্যেক হকারদের কাছে নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।

মেলায় অংশ নেয়া বিভিন্ন স্টল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এক সপ্তাহ ধরে মেলায় হকারদের প্রবেশ বেড়ে গেছে। হকার উচ্ছেদের জন্য মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

মেলার শেষ দিন শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে ভিআইপি গেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ হকারদের মেলায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এ সময় গেটে দায়িত্বরতদের হাতে মুষ্টিবদ্ধ টাকা দিতে দেখা যায়। আর মেলায় প্রবেশের পর প্রতিটি রাস্তা ও মোড়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায় ভ্রাম্যমাণ হকারদের।

Advertisement

মেলায় অন্তত দশজন হকারের সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তারা জানান মেলায় প্রবেশ করতে গেটে বস্তা প্রতি ৬০০-৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে মাল বেশি হলে টাকার পরিমাণও বেশি দিতে হয়।

কামরুল নামের বেলুনের এক হকারের কাছে ক্রেতা সেজে দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি বেলুনের দাম ২০ টাকা। এত দাম কেন জানতে চাইলে বলেন, বাহিরে একটি বেলুন বিক্রি হয় ১০ টাকায়। এখানে ২০ টাকায় বিক্রি না করলে খরচের টাকা উঠবে না। এ সময় মেলায় প্রবেশ করতে কত টাকা দিতে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জন্য ৩০ টাকা। আর মালের জন্য ৬০০ টাকা। গেটে যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদের এ টাকা দিতে হচ্ছে।

আমড়া বিক্রেতা খায়রুল বলেন, মেলার গেটে যারা আছেন তারা সবাই আমাকে চিনে। তাই আমার কাছে থেকে বেশি টাকা নেয় না। অল্প কিছু দিয়েই মেলায় প্রবেশ করতে পারি। তবে যারা বস্তা নিয়ে আসেন তাদের কাছ থেকে ৮০০-১০০০ টাকা নেয় বলে শুনেছি।

মেলায় ফুল, খাদ্য, খেলনা বিক্রির একাধিক স্টলের মালিক বলেন, হকারদের কারণে প্রতিদিন ১০-১২ হাজার টাকা কম বিক্রি হচ্ছে। অথচ মেলা প্রাঙ্গণে হকার প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

Advertisement

স্টল দিয়ে খেলনা বিক্রি করা আবুল কালাম বলেন, মেলায় কোনো হকার প্রবেশ করবে না, এ কথা প্রতিবছরই বলা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। প্রতিবছরই মেলায় দেদারছে হকার প্রবেশ করে। তবে এবার প্রথম দিকে মেলায় হকার প্রবেশ করেনি। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে মেলায় প্রতিদিন অসংখ্য হকার প্রবেশ করছে। কেউ কিছু বলছে না।

মেলার গেট ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান মীর ব্রাদার্সের কর্ণধার মীর শহিদুল আলম বলেন, মেলার ভিতরে হকার উচ্ছেদে প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে মেলা প্রাঙ্গণে হকার প্রবেশের ক্ষেত্রে আমার কোনো লোক জড়িত নেই। যদি কেউ বলে থাকে গেটে টাকা নিয়ে হকার প্রবেশ করানো হচ্ছে তবে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এমএএস/এএইচ/এমকেএইচ