কৃষি ও প্রকৃতি

ক্যাপসিক্যাম চাষে কৃষকের ভাগ্য বদল

সবজি চাষে অপার সম্ভাবনা ভোলার চরাঞ্চলগুলো। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে চরাঞ্চলগুলোতে বিদেশি সবজি ক্যাপসিক্যাম চাষ করে ভাগ্য বদল করছে কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে ক্যাপসিক্যাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। কম সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় এ সবজি চাষে চরের চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। তবে সরকারিভাবে বিশেষ কোন উদ্যোগ না থাকায় ক্যাপসিক্যাম চাষের বিপ্লব ঘটাতে পারছেন না চাষিরা।

Advertisement

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরাঞ্চলগুলো ধান, সয়াবিনের পাশাপাশি লাউ, শসা, করলা, চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছিলেন চাষিরা। গত ৪-৫ বছর আগে ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মেঘনার মধ্যবর্তী মাঝের চরে মনির পাঠান নামের এক ব্যক্তি মাত্র ১০ শতক জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষের উদ্যোগ নেন। প্রথম বছরই তিনি বাম্পার ফলন পেয়েছিলেন। তার দেখাদেখি অন্যরাও ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হন। বর্তমানে ২০-২৫ জন ক্যাপসিক্যাম চাষ করছেন।

প্রথম চাষি মো. মনির পাঠান বলেন, ‘আমি গত কয়েক বছর ধরে দেখেছি মাঝের চরে ক্যাপসিক্যাম চাষ করে অনেকে লাখ লাখ টাকা লাভ করেছে। এবছর আমিও নতুন করে ক্যাপসিক্যাম চাষ শুরু করেছি।’

Advertisement

> আরও পড়ুন- পিরোজপুরের খালে পেয়ারা ও নৌকার হাট 

চাষি মো. ছিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘আমি গত ৩ বছর ধরে মাঝের চরে ক্যাপসিক্যাম চাষ করছি। এবছর এক একর জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেছি। এতে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে ফলন বিক্রি করতে পারবো।’

মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমার দেড় একর জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করতে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এপর্যন্ত দেড় লাখ টাকার ক্যাপসিক্যাম বিক্রি করেছি। আকাশের অবস্থা ভালো থাকলে আরো ৫ লাখ টাকার ফলন বিক্রি করতে পারবো।’

Advertisement

চাষি নয়ন মিয়া, জামাল উদ্দিন ও মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত বছর অসময় বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা পোকার আক্রমণ ছিল। এবছর বৃষ্টি নেই, তাই পোকার আক্রমণ নেই। গত বছর পাইকারি বাজারে দাম কম ছিল। এবছর কেজি প্রতি ১০০ টাকা। এবার অনেক লাভ হবে। তবে ক্যাপসিক্যাম চাষ ও বিদেশে রফতানিতে সরকারিভাবে কোন সহযোগিতা পাই না। পেলে চাষে বিপ্লব ঘটতে পারতাম।’

> আরও পড়ুন- যেভাবে সুপারির ফল পচা রোধ করবেন 

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১১ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ হয়েছিল। এবছর ১৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিনয় কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বর্তমানে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। চাষের পরিমাণ বাড়াতে ও সরকারিভাবে সহযোগিতার করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসইউ/এমকেএইচ