বিএনপি ও গণফোরামকে বাদ রেখেই একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন আগামীকাল বুধবার (৩০ জানুয়ারি) বসছে। এ দিন বিকেল ৩টায় অধিবেশন শুরু হবে। এই অধিবেশন কতদিন চলবে তা এখনও জানানো হয়নি। প্রথম অধিবেশন শুরু উপলক্ষে জাতীয় সংসদের ভেতরটা ফুল ও সুদৃশ্য গাছের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে।
Advertisement
সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর দিন রাষ্ট্রপতি সংসদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। পরে রাষ্ট্রপতির ওই ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব জানাতে সাধারণ আলোচনা হয়। তবে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মারা যাওয়ায় সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হবে। এরপর তার স্মরণে আলোচনা হবে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ উপলক্ষে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সংসদে যান। এজন্য সংসদে নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৭৪ অনুযায়ী নতুন সংসদের প্রথম বৈঠকে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে হয়। এ জন্য কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে নোটিশ দিতে হয়। একজন প্রস্তাবক, একজন সমর্থক ও প্রার্থীর সম্মতি লাগে।
Advertisement
সংসদের ডেপুটি সচিব নাজমুল হক জাগো নিউজকে বলেন, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন ছাড়াও প্রথম অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন, শোক প্রস্তাব, অধ্যাদেশ উত্থাপন (যদি থাকে), সংসদীয় কমিটি গঠন (যদি থাকে), সংবিধান বা আইন অনুযায়ী কোনো রিপোর্ট উপস্থাপন (যদি থাকে) ও রাষ্ট্রপতির ভাষণ থাকে। তবে রেওয়াজ অনুযায়ী প্রশ্নকাল থাকে না।
এদিন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেয়া হবে। সংসদে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তারা সংসদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। রেওয়াজ অনুযায়ী প্রত্যেক অধিবেশনেই পাঁচজন করে সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এর মধ্যে একজন নারী সদস্যকে মনোনয়ন দেয়া হয়।
এরপর ৫টি অধ্যাদেশ উপস্থাপন করা হবে। সংসদ অধিবেশন না থাকায় এই অধ্যাদেশগুলো জারি করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। এগুলো ক্রমান্বয়ে আইনে পরিণত করা হবে।
এরপর থাকবে শোক প্রস্তাব। শোক প্রস্তাব শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দেবেন। তার ভাষণের পরই সংসদ মুলতবি করা হবে।
Advertisement
গত ৩ জানয়ারি সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে চার ধাপে এমপিরা শপথ নেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী প্রথমে নিজে শপথ গ্রহণ করেন এবং শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন। পরে অন্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। এ ছাড়া বিএনপির ৬ জন ও ঐক্যফ্রন্টের ২ জন শপথ নেননি। সুতরাং এখনই সংসদের যোগ দিতে পারছেন না তারা।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের দায়িত্ব বণ্টনএকাদশ জাতীয় সংসদে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং বিকল্প দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীদের অনুপস্থিতে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং তার অনুপস্থিতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সংসদে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নোত্তর প্রদান এবং সংসদ সম্পর্কিত কার্যাদি সম্পাদন করবেন।
মন্ত্রিসভার সবচেয়ে সিনিয়র মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তার মন্ত্রণালয় ছাড়াও সংসদ অধিবেশনের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন। এ ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক নিজের মন্ত্রণালয় ছাড়াও নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদ কার্যক্রমের দায়িত্বে রয়েছেন।
অধিবেশনে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম নিজের মন্ত্রণালয় ছাড়া রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন। সংসদ অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পালন করবেন।
এইচএস/এনএফ/এমকেএইচ