খেলাধুলা

লুইসের ঝড়ো সেঞ্চুরি : দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ কুমিল্লার

ম্যাচের জয়-পরাজয়ে কোনো হেরফের হবে না খুলনা টাইটানসের ভাগ্যের কিন্তু হেরে গেলে বিপদ হতে পারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসে। তাই পয়েন্ট টেবিলের তলানীর দল খুলনার বিপক্ষে খেলতে নামার আগে বড়সড় জয়ের পরিকল্পনা করেই এসেছিল শক্তিশালী কুমিল্লা।

Advertisement

তাদের পরিকল্পনা আরও শক্ত হয় চার ম্যাচ পর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান তারকা এভিন লুইস একাদশে ফেরায়। সেই লুইসের ঝড়ো ব্যাটেই খুলনার বোলারদের তুলোধুনো করে ২৩৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছে কুমিল্লা। যা কি-না বিপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে মাঝের চার ম্যাচ খেলতে পারেননি লুইস। আজ মাঠে ফিরে ইনিংসের তৃতীয় বলেই আবারো পেয়েছিলেন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। কিন্তু তাতে দমে যাননি তিনি। এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসে করেছেন অপরাজিত ১০৯ রান।

টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা রয়ে সয়ে করেন দুই ওপেনার এভিন লুইস এবং তামিম ইকবাল। তবে তামিমের তুলনায় বেশ সাবলীল ছিলেন লুইস। শুরু থেকেই বাউন্ডারি হাকাচ্ছিলেন নিয়মিত বিরতিতে।

Advertisement

ইনিংসের অষ্টম ওভারে পরপর দুই বলে তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়কে ফিরিয়ে কুমিল্লার রানের চাকা ধীর করার কার্যকর প্রয়াস নেন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৯ বলে ২৫ রান করেন তামিম, রানের খাতাই খুলতে পারেননি এনামুল।

পরে মাহমুদউল্লাহর ওভার থেকেই ঝড়টা নামান লুইস-ইমরুল। প্রথম ১১ ওভার শেষে কুমিল্লার সংগ্রহ ছিলো ২ উইকেটে ৮৩ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের করা ১২তম ওভার থেকে ১টি করে চার-ছক্কার মারে ১৭ রান নেন লুইস। ডেভিড উইজের করা পরের ওভারেও আসে ১৭ রান। এই ওভারে ২টি চারের সঙ্গে ১টি ছক্কাও হাঁকান ইমরুল।

মোহাম্মদ সাদ্দামের করা ১৪তম ওভারটিতে মূল ঝড় বইয়ে দেন লুইস। ৪টি বিশাল ছক্কার মারে নিয়ে নেন ২৮ রান। শরীফুল ইসলাম করতে আসেন ১৫তম ওভার। প্রথম দুই বলে ১টি করে চার-ছক্কা মেরে ১০ রান নিয়ে পরের বলে আউট হন ইমরুল। তবে শেষে তিন বলে আরও ১টি করে চার-ছক্কা হজম করে মোট ২২ রান খরচ করেন শরীফুল।

১১ ওভার শেষে কুমিল্লার সংগ্রহ যেখানে ছিলো ২ উইকেটে ৮৩, সেখানে ১৫ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৬৭ রান। অর্থাৎ প্রথম ১১ ওভারে ৮৩ রান নেয়া কুমিল্লা পরের ৪ ওভারেই নেয় ৮৪ রান। ইমরুল ২১ বলে ৩৯ করে আউট হলেও এভিন লুইস ছিলেন নিজের সেঞ্চুরির অপেক্ষায়।

Advertisement

তবে ১৬তম ওভারে থিসারা পেরেরা এবং শহীদ আফ্রিদির উইকেট তুলে নিয়ে খুলনা শিবিরে স্বস্তি ফেরান কার্লোস ব্রাথওয়েট। কিন্তু একপ্রান্তে লুইস ঠিকই খেলতে থাকেন মারমুখী ভঙ্গিতে। পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরির কারণে খেলতে সমস্যা হলেও ছক্কাবৃষ্টি থামাননি তিনি।

ইনিংসের ১৮তম ওভারেই দলীয় দুইশ পূরণ করে ফেলে কুমিল্লা। আর শেষ ওভারে গিয়ে বিপিএল ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয়, চলতি আসরে চতুর্থ এবং সবমিলিয়ে বিপিএলের ১৬তম সেঞ্চুরিটি করেন এভিন লুইস। ৪৭ বলে ৫ চার ও ৯টি বিশাল ছক্কার মারে নিজের শতক পূরণ করেন তিনি।

এর আগে ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর বরিশাল বুলসের হয়ে এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৬৫ বলে ৭ চার এবং ৬ ছক্কার মারে ১০১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন লুইস। এবার সেই ইনিংসকেও ছাড়িয়ে ৪৯ বলে ৫ চার ও ১০ ছক্কার মারে ১০৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন তিনি।

ষষ্ঠ উইকেটে লুইসকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন শামসুর রহমান। ২৪ বলে ৫৯ রানের এ জুটিতে ১ চার ও ২ ছক্কার মারে ১৫ বল থেকে ২৮ রান করেছেন তিনি। ইনিংসের শেষ তিন বলে মাত্র ২ রান নিতে পারায় রংপুর রাইডার্সের করা ২৩৯ রানের রেকর্ডটি ভাঙতে পারেনি কুমিল্লা, থামতে হয়েছে ২৩৭ রানেই।

বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ

১. রংপুর রাইডার্স - ২৩৯/৪ বনাম চিটাগং ভাইকিংস, ২০১৯২. কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস - ২৩৭/৫ বনাম খুলনা টাইটানস, ২০১৯৩. ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর - ২১৭/৪ বনাম রংপুর রাইডার্স, ২০১৩৪. চিটাগং ভাইকিংস - ২১৪/৪ বনাম খুলনা টাইটানস, ২০১৯৫. দুরন্ত রাজশাহী - ২১৩/৬ বনাম বরিশাল বার্নার্স, ২০১৩

এসএএস/এমকেএইচ