জাতীয়

আয়-ব্যয় বিশ্লেষণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রকল্প অনুমোদন

আয়-ব্যয় বিশ্লেষণ না করে এবং প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়ায় ‘বিদ্যমান সাতটি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ও নতুন ছয় টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) নতুন সরকারের প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত এ প্রকল্পে খরচ হবে ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির উদ্যোগ নেয় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাস্তবায়ন করবে বস্ত্র অধিদফতর।

কারণ ব্যাখ্যা করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত স্বাক্ষরিত এক নথিতে বলা হয়, প্রকল্পটি সেবামূলক বিধায় এ প্রকল্পের আয়-ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়নি।

প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই না করার বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, বস্ত্র অদিদফতরের ‘২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ সাল নাগাদ দেশ ও বিদেশে টেক্সটাইলে দক্ষ জনবলের চাহিদা-সরবরাহ গ্যাপ’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০১৬ সাল পর্যন্ত স্থানীয় বস্ত্রশিল্প কারখানার জন্য এক লাখ ৪১ হাজার ২২৫ জন বস্ত্র প্রযুক্তিবিদ (ফ্লোর পর্যায়ে) প্রয়োজন। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী চাহিদার ঘাটতি পূরণে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে।

Advertisement

প্রকল্পটির ওপর ১৯ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পটি কিছু শর্তসাপেক্ষে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়।

নতুন ছয়টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটগুলো হবে নওগাঁর পত্নীতলায়, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়, নোয়াখালীর কবিরহাটে, জামালপুরে, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ও মুন্সিগঞ্জ সদরে।

বিদ্যমান সাতটি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও গৌরিপুরে, জামালপুরের বকশিগঞ্জে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে, ঠাকুরগাঁও সদরে, বরগুনা সদরে ও লক্ষ্মীপুর সদরে।

প্রকল্পের যৌক্তিকতায় বলা হয়, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিবছর এক হাজার ৮৭২ জন এসএসসি ভোকেশনাল পাস করে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জনবলে পরিণত হবে।

Advertisement

প্রকল্প এলাকার নির্বাচনের যৌক্তিকতায় বলা হয়, বর্তমানে দেশে ৪২টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বস্ত্র কারখানার সংখ্যা ও প্রকৃত চাহিদার ভিত্তিতে উল্লিখিত এলাকা প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।

এর প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ২১.০৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ, প্রায় দুই লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ ঘ.মি ভূমির উন্নয়ন, একাডেমিক কাম অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ভবন নির্মাণ দুটি। ইন্টারনাল ও এপ্রোচ রাস্তা প্রায় ৯ হাজার ৯৯ বর্গকিলোমিটার, চার হাজার ৫১৮ বর্গকিলোমিটার ড্রেইন ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, এক্সটারনাল ইলেক্ট্রিফিকেশন, সাত হাজার বইপত্র ও সাময়িকী, ছয় হাজার ৭৩৪ সেট আসবাবপত্র ও একটি জিপ গাড়ি ক্রয় করা হবে।

তিন অর্থবছরে এ প্রকল্পের টাকা ব্যয় করা হবে। এর মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০৬ কোটি ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬২ কোটি ৮০ লাখ ০৭ হাজার টাকা এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৪ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

পিডি/এএইচ/এমএস