ধরুন আপনার মাসিক আয় ০-৭৫ হাজার ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ০-পৌনে সাত লাখ) তাহলে আপনার কত টাকা কর দেয়া উচিত? ধরুন ১০-১৫ শতাংশ আয়কর দেবেন আপনি। এর পরে যদি আপনি ওপরের দিকে ওঠেন, মানে একেবারে শীর্ষের কাছাকাছি, মাসে ১ কোটি ডলার হাতে আসে, সে ক্ষেত্রে করের হারও তো বাড়বে। অন্তত ৬০-৭০ শতাংশ হওয়া তো দরকারই। এই শ্রেণিতে যারা পড়বেন, তাদের থেকে বিরাট পরিমাণ কর চাওয়া হচ্ছে-এমন ভাবার কারণ নেই। ওরা যখন মইয়ের মাথাটা ছুঁয়ে ফেলেছেন, করও তো দিতে হবে, তাই নই কি?’। কথাগুলো বলেছেন মার্কিন কংগ্রেসের তরুণতম সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্তেজ।
Advertisement
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আমেরিকায় এখন আয়করের সর্বোচ্চ সীমা ৩৭ শতাংশ। আগে যা ছিল ৩৯.৬ শতাংশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর্থিক সংস্কারের পরে যা কমে গিয়েছে।
শপথ নেয়ার দিন থেকেই আলোচনায় রয়েছেন ওকাসিয়ো। এবার আমেরিকার অতি-ধনীদের (আল্ট্রা রিচ) ওপরে ৬০-৭০ শতাংশ কর চাপানোর প্রস্তাব দিয়ে ফের আলোচনায় এসেছেন এ তরুণতম কংগ্রেসম্যান।
কঠিন পরিশ্রম করে রোজগার করতে হতো বাবা-মাকে। নিউইয়র্কের ২৯ বছরে এই তরুণী সেটা দেখেই বড় হয়েছেন। তাই নির্বাচনী প্রচারের সময়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলো ভুলে যাননি। আয়কর প্রসঙ্গে তাই একটি মার্কিন চ্যানেলকে বলেছেন, ‘ওদের যথেষ্ট পরিমাণ কর দেয়া উচিত।’
Advertisement
জাতিসংঘের পরিবেশ প্রকল্পের সবুজ নয়া চুক্তির (‘গ্রিন নিউ ডিল’) আওতায় রাখা হচ্ছে প্রস্তাবিত এই শুল্ক পরিকল্পনাকে। ডেমোক্র্যাটিক সদস্য, যিনি এখন জনপ্রিয় তার টুইটার পরিচয় ‘এওসি’ (নামের আদ্যক্ষর) দিয়ে, চাইছেন অতি-ধনীদের থেকে আদায় করা করের ওই অর্থ ‘সবুজ নয়া চুক্তি’তে ঢালতে। এই চুক্তির লক্ষ্য ২০৩০-এর মধ্যে কার্বন নিঃসরণ একেবারে বন্ধ করে দেয়া।
এওসি-র প্রস্তাব কতটা দিনের আলো দেখবে কেউ জানে না। কিন্তু কংগ্রেসের অনেক সদস্যই সেটিকে সমর্থন জানিয়েছেন। একটি মার্কিন দৈনিকের সম্পাদকীয় পাতার লেখায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান পাশে দাঁড়িয়েছেন আলেকজান্দ্রিয়ার। যদিও এই তরুণীর বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য তাকে ‘অজ্ঞ এবং উন্মাদ’ বলে হেয় করার একটা ধারাবাহিক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেখানে ক্রুগম্যান বলেছেন, ‘কর সংক্রান্ত বিষয়ে উনি সেটাই বলছেন, যা অর্থনীতিবিদেরা বলে থাকেন।’
আলেজান্দ্রিয়া ওই চ্যানেলে মুখ খুলেছেন ট্রাম্পকে নিয়েও। এমনিতে প্রেসিডেন্টকে নিয়ে খুব একটা বলেন না। তবে প্রশ্নের মুখে এওসি-র জবাব, ‘উনি নিঃসন্দেহে বর্ণবিদ্বেষী। তিনি বিষয়টাকে বাড়তে দিয়েছেন এবং সমর্থনও করেছেন।’
জবাবে হোয়াইট হাউস বলেছে-প্রেসিডেন্ট বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন। ওকাসিয়ো কর্তেজের মন্তব্য একেবারেই অজ্ঞতা থেকে!
Advertisement
এসআর/এমকেএইচ