খেলাধুলা

সুইজারল্যান্ড আর টানছে না আর্চার রোমান সানাকে

টোকিও অলিম্পিক গেমস সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বৃত্তি নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ট্রেনিংয়ে গিয়েছিলেন আর্চার রোমান সানা। কিন্তু ২ বছরের বৃত্তির ৬ মাস অনুশীলন করেই দেশে ফিরে এসেছেন বাংলাদেশ আনসারের এ আর্চার।

Advertisement

বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল সোমবার জানিয়েছেন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে রোমান সানা দেশে এসেছেন। তবে আর্চার রোমান সানা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন তিনি আর সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছেন না। লুজানের আইওসির আর্চারি ট্রেনিং সেন্টারকে বাই-বাই বলে ফিরে এসেছেন তিনি।

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) রোমান সানাকে বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছিল ২ বছরের জন্য। ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিক পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডে অনুশীলন করতে পারতেন তিনি। কিন্তু রোমান সানা দেড় বছর বাকি থাকতেই সেখানে আর ট্রেনিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও দেশের অন্যতম সেরা এ আরচারের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানা নেই বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ফখরুদ্দিন হায়দারের। এমন কী রোমান সানা যে দেশে ফিরে এসেছেন তাও তিনি জানেন না।

‘রোমান দেশে চলে এসেছেন তা আমি জানি না। আমরা তার বৃত্তির ব্যবস্থা করেছিলাম। ফিরে আসাটা তার ও ফেডারেশনের বিষয়’- বলেছেন বিওএর মহাপরিচালক। পুরো সময় অনুশীলন না করে ফিরে আসায় ভবিষ্যতে এ ধরনের বৃত্তি পেতে অন্য কোনো ক্রীড়াবিদের সমস্যা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুদ্দিন হায়দার বলেছেন, ‘টোকিও অলিম্পিকের জন্য নতুন কাউকে পাঠানোর সুযোগ হবে না। তবে পরের অলিম্পিক গেমসের সময় হলে কী হবে তা তখনই বোঝা যাবে।’

Advertisement

রোমান সানা কেন আর সুইজারল্যান্ডে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন? সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আনসারের এ আর্চার জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘বেশ কিছু কারণেই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুইজারল্যান্ডে এখন অনেক ঠান্ডা। তাই আমাদের অনুশীলন করতে হয় ইনডোরে। কিন্তু আর্চারি আউটডোর গেম। ইনডোরে অনুশীলন করে হঠাৎ আউটডোরে খেলতে সমস্যা হতে পারে। যে কারণে আমি দেশে অনুশীলন করবো।’

আইওসির ট্রেনিং সেন্টারে আরো সমস্যা দেখেছেন রোমান সানা। ‘এ ধরনের বৃত্তি সাধারণত আর্চারিতে অনুন্নত দেশগুলো নিয়ে থাকে। যাদের দেশে ভালো কোনো কোচ নেই তারা এ সুযোগ নেন। আমরা ওখানে ৬ জন আর্চার আইওসির তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করেছি। যার মধ্যে এশিয়ার আমিই একা। বাকি ৫ জন আফ্রিকার। আর আফ্রিকার যারা আছেন তারা ভালো আর্চার নন। আমাদের দেশের জুনিয়র আর্চাররাও তাদের চেয়ে ভালো স্কোর করে। তাদের সঙ্গে থেকে অনুশীলন করলে আমার আসলে কোনো উপকার হবে না। বরং দেশে আমি জাতীয় দলের অনেক আরচারের সঙ্গে ট্রেনিং করার সুযোগ পাবো। মার্টিন ফ্রেডরিখের মতো কোচ আছেন আমাদের’- বলেন রোমান সানা। ট্রেনিংয়ের এ প্রতিকূলতার কারণেই সুইজারল্যান্ড আর টানছে না রোমান সানাকে।

রোমান আইওসির বৃত্তি নিয়ে সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলেন জুন মাসে। মাঝে ফিরে এসেছিলেন এশিয়ান গেমসে অংশ নেয়ার জন্য। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ শেষে ১১ সেপ্টেম্বর লুজান গিয়েছিলেন রোমান সানা। টানা ৩ মাস অনুশীলন করে ফিরে এসেছেন তিনি।

সুইজারল্যান্ডে ৬ মাসের ট্রেনিং নিয়ে রোমান সানা বলেছেন, ‘শেখার তো কোনো শেষ নেই। ওখানে সবচেয়ে বড় দিকটা হলো প্রযুক্তি। যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় ট্রেনিংয়ে তা আমাদের নেই। তাছাড়া ওখানে বিশ্বমানের কিছু কোচও আছেন। কিম নামের দক্ষিণ কোরিয়ার এক কোচ আছেন যিনি তাদের দেশের ১০ সেরা কোচের একজন। তাদের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে।’

Advertisement

জাতীয় চ্যাম্পিয়শিপের পর ২২ থেকে ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি ঢাকায় তৃতীয় আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ। রোমান সানার লক্ষ্য এখন আগামী বছর জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড আর্চারি চ্যাম্পিয়শিপে কোয়ালিফাই করা। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে চোখ রেখেই তার আগের ঘরে-বাইরের টুর্নামেন্টগুলোতে অংশ নেবেন দেশের অন্যতম সেরা এ আর্চার।

আরআই/এসএএস/এমএস