রাজনীতি

ঢাকা-১৫ আসনে সকালে জামায়াত বিকেলে আ.লীগের প্রচারণা

রাজধানীসহ সারা দেশে পুরোদমে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। শুরু থেকেই চলছিল আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট মনোনীত প্রার্থীদের একপাক্ষিক নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। একই চিত্র ঢাকা-১৫ আসনেও। এ এলাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত চলছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগ।

Advertisement

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন বর্তমান এমপি কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএনপি জোটের পক্ষে ধানের শীষ প্রতীকে জামায়াত নেতা ডা. শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকে সামসুল হক এবং জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকে আবদুল মান্নান মিঞা। মিরপুর-কাফরুল মিলে এই আসনে ভোটার প্রায় চার লাখ।

কামাল আহমেদ মজুমদারের সমর্থনে মিছিল করছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা

শুরু থেকেই প্রচারণায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের ধানের শীষের প্রার্থী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। ২০ বছর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার কোনো আসনে প্রার্থী হয়েছেন জামায়াত নেতা। যুদ্ধপরাধারে দায়ে দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির পর দলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতায় পরিণত হয়েছেন তিনি।

Advertisement

সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে কর্মী-সমর্থকরা। বাধা ও গ্রেফতার আতঙ্কের মধ্যেই ঢাকা-১৫ আসনের বেশ কয়েকটি এলাকায় সকালেই প্রচারণা সেরেছে তারা।

নৌকা প্রতীক নিয়ে মিছিল করছেন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা

অন্যদিকে দুপুরে শুরুর কথা থাকলেও বৃষ্টি বাগড়ায় আটকে গেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রচারণা। বিকেলে ৪টি এলাকায় একযোগে প্রচারণা ও সন্ধ্যায় ৪ নং ওয়ার্ড এলাকায় উঠান বৈঠকের কথা রয়েছে তার।

নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের অভিযোগ, নিজেদের কর্মী ও সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে মাঠে নামতে বাধা দিচ্ছে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা।

Advertisement

জামায়াত প্রার্থীর সমর্থনে লিফলেট বিতরণ করছেন নেতাকর্মীরা

সোমবার সকালে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিশে শুরার সদস্য মুহাম্মাদ আতাউর রহমান সরকার ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সালাহ্ উদ্দিন আইউবীর নেতৃত্বে ২০দল ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা-কর্মীরা শেওড়াপাড়া, ইষ্ট ওয়েস্ট স্কুল থেকে সিটি বাজার, ওলি মিয়ার টেক, পীরেরবাগ, ৬০ ফুট পাকা মসজিদ পর্যন্ত গণসংযোগ, প্রচারণা, মিছিল এবং লিফলেট বিলি করেন।

দলের প্রচার সহকারী এস এম আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হুমকি-ধমকি, পোষ্টার লুটসহ প্রচারণা চালাতে গেলে এ পর্যন্ত ধানের শীষের সমর্থক শতাধিক নারী-পুরুষকে পুলিশ আটক করেছে। মাইকিং করতে গেলে অটোরিকশা ও মাইকম্যানকে আটক করা হয়েছে। বাসা ও অফিসে পুলিশী হয়রানি চলছে। এরপরও ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

লিফলেট হাতে মিছিল করছেন জামায়াত প্রার্থীর সমর্থকরা

ঢাকা-১৫ আসনের একাধিক এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পাড়া-মহল্লা, রাস্তা-ঘাট, অলি-গলিত, দেয়াল নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেলেও দেখা মেলেনি ধানের শীষের পোস্টার। তবে জাকের পার্টির গোলাপ ফুল, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকেরও পোস্টার রাস্তা-ঘাট, পাড়া-মহল্লায় ঝুলছে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, তিন দফায় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি। এই এলাকার উন্নয়ন দৃশ্যমান। এ কারণেই মানুষ আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত কোনো দলের প্রার্থীকে নয়।

আওয়ামী লীগ ও জাকের পার্টির প্রার্থীদের পোস্টার

তার নির্বাচনী প্রচার-কমিটির কো-অর্ডিনেটর শহিদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে প্রচারণার কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে তা বন্ধ রয়েছে। তবে বিকেলে আমাদের প্রচারণা ফের শুরু হবে, আর সন্ধ্যায় হবে একাধিক পথসভা ও উঠান বৈঠক।

জেইউ/এমএমজেড/আরআইপি