দেশজুড়ে

হাই মাস্টারের কেউ নাই

একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা যখন নেতাকর্মী নিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত তখন ইজিবাইকে বসে মাইকে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী নিজে। পোস্টার সাঁটানোর সঙ্গে সঙ্গে গণসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

Advertisement

নিজে প্রচারণা চালিয়ে মাইকিং করে ভোট চাচ্ছেন, যাচ্ছেন মানুষের ঘরে ঘরে। অন্য প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থক নিয়ে জমজমাট প্রচারণায় যখন ব্যস্ত তখন কুড়িগ্রাম-১ আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী সাবেক ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাস্টার চালাচ্ছেন এই ব্যতিক্রম প্রচারণা। তার এই ব্যতিক্রমী প্রচারণা দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে ভোটারদের কাছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইজিবাইকের সামনে-পেছনে দুটি মাইক বেঁধে নির্বাচনী এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন আব্দুল হাই মাস্টার। বাজারে বাজারে থেমে থেমে ভোটারদের সঙ্গে করছেন কুশল বিনিময়। পরিচয় দিয়ে নিজের জন্য মাইকে ভোট চাচ্ছেন তিনি।

মাইকে তিনি প্রচার করছেন, ‘আমি হাই মাস্টার, ভাই-বোনদের বলে যাই, গোলাপ ফুল মার্কায় ভোট চাই। আমাকে ভোট দিয়ে এলাকার সমস্যা সমাধানে সংসদে কথা বলার সুযোগ দিন। আমি সবার ভোট চাই।’

Advertisement

তার এমন প্রচারণা ভোটের মাঠে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। সাধারণ ভোটাররা বেশ আগ্রহের সঙ্গে শুনছেন তার মাইকিং। তাকে ভোট দেয়ার কথা বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে আব্দুল হাই মাস্টার বলেন, আমার কোনো কর্মী বাহিনী নেই। নিজেই প্রার্থী, নিজেই কর্মী এবং প্রচারক। প্রচারের জন্য আমার কেউ নাই। সারাজীবন জনগণের জন্য কাজ করেছি। নাগরিক সমস্যা, পরিবেশ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। তাই এই এলাকার মানুষ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে বলে প্রত্যাশা রাখি।

আব্দুল হাই মাস্টার ২০০৮ সালে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি একই উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় ভুরুঙ্গামারী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ময়লার ভাগাড়ে নেমে ময়লা পরিষ্কার করতেন। বিষয়টি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ইত্যাদিতে উঠে আসে। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির একেএম মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে পরাজিত হন।

Advertisement

এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-১ আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী হন তিনি। নির্বাচনী হলফনামায় আব্দুল হাই মাস্টার উল্লেখ করেছেন, ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামের মৃত এন্তাজ আলীর ছেলে আব্দুল হাই বিএ পাস। সম্পত্তি বলতে বাড়িভিটাসহ ২৮ শতক জমি, একটি টিভি, ৫ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা রয়েছে তার। তবে তার কোনো ধরনের ঋণ বা মামলা নেই।

কুড়িগ্রাম-১ আসন গঠিত হয়েছে দুটি উপজেলা নিয়ে। এর মধ্যে নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন এবং ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে।

এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬১ হাজার ২৭২ জন। এ আসনে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকলেও দলীয় প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন আছলাম হোসেন সওদাগর, জাতীয় পার্টি লাঙল প্রতীক লড়ছেন একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন সাইফুর রহমান রানা, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকে লড়ছেন আব্দুর রহমান প্রধান, জাকের পার্টি গোলাপ ফুল প্রতীকে লড়ছেন আব্দুল হাই, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকে লড়ছেন জাহিদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) বাইসাইকেল প্রতীকে লড়ছেন রশীদ আমেদ ও তরিকত ফেডারেশন ফুলের মালা প্রতীকে লড়ছেন কাজী লতিফুল কবির রাসেল।

নাজমুল/এএম/আরআইপি