আইন-আদালত

পাইপ লাইনে ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, দুর্ঘটনা ঝুঁকি রোধে রিট

গ্যাসপাইপ লিকেজ ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণহানি যেন না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নিদের্শনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত।

Advertisement

রিটে গ্যাসপাইপ সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে ও সিলিন্ডার যেন বিস্ফোরণ না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধানের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনার্জি রেগুলারিটি কমিশন ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়েছে।

সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটির শুনানি হতে পারে।

আইনজীবী জানান, রুল জারির জন্য পাইপ লাইনে ও সিলিন্ডারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রোধে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং পাইপ লাইনে ও সিলিন্ডারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে বিবাদিদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।

Advertisement

গত ১৯ নভম্বর একটি দৈনিক পত্রিকা ‘মৃত্যুফাঁদ থেকে সাবধান, গ্যাস পাইপ লিকেজ ও সিলিন্ডার বিস্ম্ফোরণে প্রাণহানি, দায় নিচ্ছে না কেউ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন অমিত দাস গুপ্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সড়কের আশপাশে এবং বাসাবাড়িতে গ্যাস পাইপলাইন ছিদ্র ও চুলার সংযোগ থেকে বের হওয়া গ্যাসে প্রায়ই ঘটছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার থেকেও ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাতে হচ্ছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষকে। আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসতে হচ্ছে অনেককে। আবার কারও কারও পুরো পরিবার চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। দু-একজন আবার দগ্ধ হয়ে দুর্বিষহ জীবন নিয়ে বেঁচে থাকেন।’

‘সর্বশেষ গত শুক্রবার যাত্রাবাড়ীতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে লিকেজ হওয়া গ্যাসে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ম্ফোরণের ঘটনায় এক শিশুসহ দু'জনের করুণ মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় দগ্ধ হয়েছে আরও পাঁচজন। তাদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের। এর আগে গত ২ নভেম্বর গ্যাসের আগুনে আশুলিয়ায় একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গ্যাসের আগুনের কারণে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার দায় নিচ্ছে না কেউ। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা যন্ত্রণাকাতর জীবনের দায়ভার বয়ে বেড়াচ্ছেন।’

‘ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে গ্যাস দুর্ঘটনায় ১০৩টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে গ্যাসলাইন লিকেজে ৫৫টি এবং এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে ৪৮টি। এতে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে শিশুসহ ছয়জন এবং গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৩১ জনকে। অবশ্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় যেসব দগ্ধ হাসপাতালে মারা যায়, তাদের হিসেব ফায়ার সার্ভিস রাখে না। সে কারণেই মৃত্যুর সংখ্যা পাওয়া যায়নি তাদের কাছ থেকে।’

Advertisement

এফএইচ/এমএমজেড/জেআইএম