আন্তর্জাতিক

মাকে সন্দেশ খাওয়ানোয় আশি বছরের বৃদ্ধ বাবাকে পেটালো ছেলে!

সুগারে আক্রান্ত মাকে লুকিয়ে মিষ্টি খাইয়েছিলেন আশি বছরের বৃদ্ধ বাবা। জানতে পেরে বাবাকে চড়-থাপ্পড় মেরে ‘শাসন’ করল ছেলে। গত শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থানার বিল্ডিং মোড় এলাকার এই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ধারণ করে প্রতিবেশী এক যুবক। সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছেলের এমন কীর্তি দেখে নিন্দার ঝড় উঠেছে নেট দুনিয়ায়।

ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে, শীর্ণ চেহারার পাঞ্জাবি পরা এক বৃদ্ধের গলা (কখনও কখনও পাঞ্জাবির কলার) ধরে গালে একটার পর একটা চড় মারছে ছেলে। বলছে, ‘কেন মাকে সন্দেশ খেতে দিয়েছো? জানো না, মায়ের মিষ্টি খাওয়া নিষেধ। আমাকে জিজ্ঞেস করোনি কেন?’

মারের চোটে বৃদ্ধের চশমা খুলে পড়ার জোগাড়। তিনি কিছু বলতে চাইছেন বারবার। কিন্তু কোনো রকম কথা বলার সুযোগ না দিয়েই চলছে লাগাতার ‘শাসন’। ভিডিওতে বৃদ্ধকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘ভুল হয়ে গিয়েছে গেছে’। তাতেও থামছে না চড়-থাপ্পড়।

Advertisement

বুধবার পুলিশ খবর পেয়ে বাড়িতে আসে। পাড়া-পড়শিদের পীড়াপীড়িতে থানায় অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধ মানিকলাল বিশ্বাস (৮০)। সেদিনই গ্রেফতার করা হয় ছেলে প্রদীপ বিশ্বাসকে (৪০)। প্রদীপ অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী।

তার বক্তব্য, ‘বাবার গায়ে হাত তোলাটা ঠিক হয়নি। ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।’

তবে বাবার সঙ্গে এমন আচরণ প্রথম নয় প্রদীপের। মানিকবাবুকে কারণে-অকারণে প্রায়ই মারধর করে প্রদীপ। ঠিক মতো খেতে দেয়া হয় না বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন বৃদ্ধ। তার কথায়, ‘স্ত্রীর সুগার আছে। তা-ও ওকে ডেকে অল্প একটু মিষ্টি খাইয়ে ফেলেছিলাম। জানতে পেরে ছেলেটা কী মার মারল!’

মানিকলাল বলেন, ‘আমি কিন্তু এত সবের পরেও কাউকে কিছু বলিনি। সকলে খবর পেয়ে (পুলিশ) বাড়িতে আসছেন।’

Advertisement

প্রতিবেশী এক যুবক বলেন, প্রদীপ যে তার বাবাকে মারধর করে, সেটা আমরা জানতাম। কিন্তু সরাসরি কোনো প্রমাণ ছিল না। এমন ছেলেকে উচিত শিক্ষা দেয়া দরকার।

অশোকনগরের বিধায়ক ধীমান রায় জানান, ঘটনাটা তাকে জানিয়েছিলেন মানিকবাবু। পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিধায়ক। কিন্তু সে সময়ে মানিক বলেছিলেন, ‘পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে ছেলেটাকে কষ্ট দিতে পারে। চাকরি-বাকরি নিয়ে টানাটানি হতে পারে। অভিযোগ জানিয়ে কী দরকার।’

তার এমন প্রতিক্রিয়া শুনে সে সময়ে বিস্মিত হয়েছিলেন ধীমান রায়। বলেন, ‘যতই হোক, পিতৃস্নেহ।’

সূত্র : আনন্দবাজার

এমবিআর/এমএস