প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কঠোর সমালোনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘বিএনপি নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে’ সিইসি এই কথা বলে বিএনপিকে ভয় দেখাচ্ছেন। যাতে শেখ হাসিনার অধীনে একতরফা বাকশালী নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমি সপাটে সিইসিকে জানিয়ে দিতে চাই বিএনপির নিবন্ধন নিয়ে কোনো অশুভ প্ল্যান থাকলে অবৈধ সরকারের পাশাপাশি সিইসিকেও পতনের ঝুঁকিতে পড়তে হবে।’
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘এবারে নির্বাচনে না এলে নাকি নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে বিএনপি-কথাটি বলেছেন, সিইসি, যিনি কুমিল্লায় ডিসি থাকার সময় জনতার মঞ্চ তৈরি করেছিলেন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেছিলেন। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে মিশতে মিশতে, বাকশালী সংস্কৃতির স্পর্শ পেতে পেতে শাসকগোষ্ঠীর মনের মানুষে পরিণত হওয়া সিইসি কে এম নুরুল হুদা সাহেব একবারেই খাঁটি বাকশাল মার্কা মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘সিইসিকে বলে রাখি একটি জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলের অতীত অর্জন, কীর্তি, সংগ্রাম ও অঙ্গীকার রক্ষার মধ্য দিয়ে জনগণের ভেতরে যে মজবুত অবস্থান তৈরি হয়, সেই দলের রেজিষ্ট্রেশন থাকে জনগণের হাতে। জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলকে কাগুজে নিবন্ধনের ঝুঁকির কথা বলে লাভ হবে না। জনগণের বিচারই রাজনৈতিক দলের টিকে থাকার মাপকাঠি। কোনো আত্মা বিক্রি করা ব্যক্তি কর্তৃক যখন জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধনের ঝুঁকির কথা বলে যে হুমকি দেয়া হয় তাতে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসকের আক্রমণ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে লিপ্ত সাহসী জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাকর্মীরা বিচলিত হয় না।
তিনি আরও বলেন, ভোটাধিকার হরণের জন্য দায়ী সিইসি ভোটারদের অভিশাপে নিজের আত্মপতনের অন্ধকার গহব্বরে হারিয়ে যাবে। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া নব্য বাকশালী সরকারের প্রতিভূ এই সিইসি কে এম নুরুল হুদা। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডার্ক ম্যাটার হচ্ছেন সিইসি। তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ভোটাধিকারহারা জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ।’
রিজভী বলেন, ‘পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে ৪ হাজার ৪৩টি, এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৮৪ হাজার ১১ জনকে আর অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩০ জনকে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ হাজার ২৯২ জনকে।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে শুধু মিথ্যা মামলা দায়েরই নয়, তাদের আইনজীবীদের মামলার নকল কপিও দিচ্ছে না পুলিশ। থানা থেকে আদালতে এজাহার পাঠানোর পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক তা তালাবদ্ধ করে রাখছেন, যা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। কারণ এর মাধ্যমে আসামীদের আইনি লড়াইয়ে প্রাপ্য অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণরূপে মানবাধিকার লঙ্ঘন।
Advertisement
রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা জনসভার জন্য অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছি, আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন, ২৯ সেপ্টেম্বরের স্থলে ৩০ তারিখ হলেও আপত্তি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমএমজেড/এমএস