খেলাধুলা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সোহেলের তীব্র সমালোচনা

শনিবার শেষ ম্যাচের আগে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশকে দুইয়ে নামায় পাকিস্তান। আর নিজেদের ম্যাচে নেপালের কাছে ২-০ গোলে হেরে ৬ ঘণ্টা আগেও গ্রুপের শীর্ষে থাকা বাংলাদেশ বাদই পড়ে যায় টুর্নামেন্ট থেকে।

Advertisement

নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের পরাজয়ের খলনায়ক গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলের অমার্জনীয় ভুলের খেসারত দিয়ে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

রাইট উইংয়ে ফ্রি-কিক পায় নেপাল। শট নেন নেপালের বিমল ঘার্তি মাগার। তার নেয়া দুর্দান্ত শটটি চলে আসে সোজা গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলের হাতে। দুই হাত মাথার ওপর বাড়িয়ে বলটি লুফে নেন গোলরক্ষক। কিন্তু হাতে আর বলটি জমিয়ে রাখতে পারেননি সোহেল। তার হাত গলে বল চলে যায় জালে। টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

সেই গোলই কাল হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের জন্য। গোল হজম করে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি দল। শেষদিকে আরও এক গোল খেয়ে হারতে হয় ২-০ গোলে। ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই দুয়োধ্বনি চলতে থাকে সোহেলের নাম ধরে। শেষ দিকে শুরু হয় বোতলবৃষ্টিও।

Advertisement

শুধু মাঠের দুয়োধ্বনিতেই সোহেলের সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। সবার আক্রমণের কেন্দ্রে গোলরক্ষক সোহেল।

নাহিদ শিকদার নামের একজন সোহেলের এমন হাস্যকর ভুল নিয়ে কথা বলতেই যেন অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি লিখেন, 'গোল কিপারের ভুল নিয়ে কিছু বলবো না! তবে দলে ওনার চাইতেও ভালো কিপার ছিল। সবচেয়ে বড় কথা শহীদুল (সোহেল) এই ধরনের ভুল করতে অভ্যস্ত। বহুবার তিনি এমন ভুল করেছেন।'

মোবাশ্বের হোসেন হৃদয় এমন দুঃখভরা মুহূর্তেও মজা করতে ছাড়েননি। রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরোর করা একই ধরনের ভুলকে এটির সাথে তুলনা দিয়ে তিনি লিখেন, 'কাবায়েরো শুধু বলেছিল, 'সোহেল আমার ভাই' অতঃপর......'

গোলরক্ষক সোহেলের এমন ভুলের জন্য আক্ষেপ নিয়ে দলের গোলরক্ষকের দায়িত্বটাই নিজ কাঁধে তুলে নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন নীরব হৃদয়। তার ভাষ্য, 'ভাই জাতীয় দলের গোলি (গোলরক্ষক) হতে কত টাকা লাগে? কেউ একটু জানাবেন?'

Advertisement

রিফাত হাসান নামক একজন আক্ষেপের সুরে ধরিয়ে দেন আশরাফুল ইসলাম রানার বদলে শহীদুল আলম সোহেলকে খেলানোর ভুল সিদ্ধান্তটি, 'এইটাকে ঠিক কপাল খারাপ বলা যায় না সম্ভবত।সেরা ফর্মে থাকা গোলরক্ষককে বসিয়ে রেখে এমন একজনকে নামাইলো যার ভুলে কয়েকদিন আগেই শ্রীলংকার কাছে হেরেছি।'রিফাত হাসানের মতোই আক্ষেপের সুরে পার্থ অ্যাভেইরো লিখেন, 'এই ধরনের মিসে যখন ম্যাচ হেরে যাই তখন আক্ষেপটা খুব বেশি থাকে, খুব খুব বেশি। পারলাম না।'

সোহেলের গোলরক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলের মাহেদী। তিনি লিখেন, 'শহীদুল গোলরক্ষক হওয়ার যোগ্যতাই রাখেনা! একই ভুল বারবার। বাংলাদেশ দলের জন্য শুভকামনা।'

রিয়াজুল ইসলাম শুভর লেখনীতেও পাওয়া যায় আশরাফুল রানাকে বসিয়ে শহীদুল সোহেলকে খেলানোর ভুলের কথা। তিনি লিখেন, 'সেরা ফর্মে থাকা গোলরক্ষক রানাকে বসিয়ে রাখার ফল হাতেনাতে পেল বাংলাদেশ। নীলফামারীতে শ্রীলংকার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেও গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের বাজে ভুলের কারণে হারতে হয়েছিল। নেপালের সাথেও বাজে ভুল করলো সোহেল।'

সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ এতো সহজ থাকার পরেও গোলরক্ষকের ভুলে বাদ পড়ার হতাশা ঝরে পড়ে পার্থ ওঝার লেখায়। তিনি লিখেন, 'যেখানে ম্যাচ ড্র করলেও আমরা কোয়ালিফাই করতাম সেখানে এসে সোহেল রানার এমন ভুল সত্যিই হতাশাজনক।'

হতাশা ঝরে পড়ে আলআমিন মোল্লার কণ্ঠেও, 'গোলরক্ষকের ভুল নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই। এই গোলরক্ষক আগেও এমন হাস্যকর ভুল করে আমাদের ডুবিয়েছে, আজও ডুবালো এবং ভবিষ্যতেও ডুবাবে। বেসিকে এতো বড় একটা সমস্যা থাকার পরেও কিভাবে জাতীয় দলে খেলে বুঝি না! অনেক আশা নিয়ে খেলে দেখতে বসেছিলাম,হতাশা ছাড়া কিছুই পেলাম না।'

এসএএস/আরএস