জাতীয়

‘লাইসেন্স না থাকলে মামলা দেন’ সার্জেন্টকে শিক্ষার্থীরা

গাড়ি দেখলেই ঘিরে ধরছে শিক্ষার্থীরা। চালকদের কাছে জানতে চাচ্ছে লাইসেন্স আছে? থাকলে দেখান। না থাকলে সার্জেন্টকে বলছে স্যার মামলা দেন। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন। ফলে রেহাই পাচ্ছে না পুলিশ, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার যাত্রাবাড়ী মোড়সহ আশপাশ এলাকায় চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রতিটি বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ির লাইসেন্স দেখছে ছাত্ররা।

পাশাপাশি গাড়ির গ্লাসে লাল রং দিয়ে ক্রস চিহ্ন একে দিচ্ছে তারা।

আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, শহীদ জিয়া গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডিএমআরসিসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে।

Advertisement

দুপুর ২টার দিকে দনিয়া থানার একটি গাড়ি আসে যাত্রাবাড়ী মোড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আটকে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় গাড়ির লাইসেন্স দেখতে চান তারা। পুলিশের গাড়ির লাইসেন্সটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। সার্জেন্টকে ডেকে মামলা দিতে বলে।

এ সময় ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস, পুলিশ ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকে। পরে মামলা দেয়া হবে আশ্বাস দিয়ে পুলিশের গাড়িটি সরিয়ে নেয়া হয়।

লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল চালানোর অভিযোগে পুলিশ, সাংবাদিক ও বেশ কিছু সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়।

Advertisement

লাইসেন্স ছাড়া আশিয়ান বাসের চালক গাড়ি রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ধরে পুলিশে দেয় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, চালকের লাইসেন্স দেখা আমাদের কাজ না। কিন্তু রাস্তায় আমরা নিরাপদ না। তাই বাধ্য হয়ে নেমেছি। রাস্তায় গাড়ির চাপায় আমার বোন-ভাই মারা যাবে এটি আমরা আর দেখতে চাই না। আমরা চাই নিরাপদ সড়ক। সরকার এটি নিশ্চিত করলেই আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো। কারণ আমাদের কাজ পড়ালেখা করা; রাস্তায় আন্দোলন করা না।

তারা বলেন, আমরা রাস্তা বন্ধ করিনি। যেসব গাড়ির লাইসেন্স আছে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। যাদের লাইসেন্স নেই সেসব চালকদের ধরছি।

যাত্রাবাড়ীর পুলিশ সার্জেন্ট বিজন কুমার জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্ররা গাড়ির লাইসেন্স দেখছে; না থাকলে আমাদের কাছে নিয়ে আসছে আমরা আইন অনুযায়ী মামলা দিচ্ছি। সকাল থেকে আন্দোলনের কারণে গাড়ি কম চলছে।

ট্রাফিকের কাজ ছাত্ররা কেন করছে জানতে চাইলে পুলিশ সার্জেন্ট বলেন, আমরা আমাদের কাজ করছি। ছাত্ররা সহযোগিতা করছে। তবে আমাদের পরিবহনসহ পুরো ব্যবস্থাপনায় কিছু সমস্যা আছে এ বাস্তবতা বুঝতে হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন করছে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। আন্দোলনের কারণে রাস্তায় যানবাহন চলাচল কম করছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। তবে ভোগান্তির মধ্যেও আন্দোলনকে স্বাগত জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

এসআই/এমআরএম/পিআর