খেলাধুলা

কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে, ব্যাটিং সহজ ছিল না : তামিম

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে শুরুতেই হোচট, ১ রানেই নেই ১ উইকেট। আরও একবার ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ধ্বসে পড়ার শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজের ভূত তখন মাথায় ঘুরঘুর করছিল। তবে সেই ভূত তাড়ানোর কাজটা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই করেছেন তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে অবিশ্বাস্য এক জুটিতে টাইগারদের ম্যাচে ফিরিয়েছেন এই যুগল। যাদের দেখে মনে হচ্ছিল, ব্যাটিংয়ের জন্য কতই না সহজ উইকেট ছিল গায়ানায়!

Advertisement

বাস্তবতা তার উল্টো। যারা খেলা দেখেছেন, তারা খালি চোখেই বুঝতে পারবেন, গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে রোববারের উইকেটটি মোটেই ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ ছিল না। উইকেট স্লো ছিল, ছিল স্পিনারদের জন্য টার্ন, পেসারদের জন্যও সুবিধা। শুরুর দিকে সাকিব-তামিমের কেউই ভালোভাবে ব্যাটে বল লাগাতে পারছিলেন না। তবে স্বস্তির বিষয় হলো, ওমন উইকেটে যেমন ব্যাটিং দরকার ঠিক তেমনটিই করেছেন টাইগার দলের অভিজ্ঞ এই দুই সেনানী। দ্বিতীয় উইকেটে তাদের ২০৭ রানের জুটিতে ভর করেই ৪ উইকেটে ২৭৯ রানের বড় পুঁজি যায় সফরকারিরা। ম্যাচটা তারা জিতেছে ৪৫ রানে।

তামিম-সাকিবের ২০৭ রানের জুটিটি ছিল ওয়ানডেতে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আর মাহমদুউল্লাহর ২২৪ রানের বিখ্যাত জুটিটি এই তালিকায় সবার উপরে।

তামিম এমনিতে মেরে খেলে অভ্যস্ত। তবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে উইকেটের সঙ্গে মানানসই এক ইনিংসই বেরিয়ে এসেছে তার উইলো থেকে। ১৩০ বলের ইনিংসে তিনি বল খেলেছেন ১৬০টি। এই ইনিংসটিকে কিভাবে মূল্যায়ন করছেন? দেশসেরা ওপেনারের নির্লিপ্ত উত্তর, ‘যখন একটি ইনিংস দলের জয়ে অবদান রাখে, তখন সেটা সবসময়ই স্পেশাল কিছু।’

Advertisement

তামিমের ১০তম সেঞ্চুরির ইনিংসটি ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে ধীরগতির সেঞ্চুরি। তবে সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর আগ্রাসী ভূমিকাতেই দেখা গেছে এই ওপেনারকে। শেষ ৩০ রান করেছেন মাত্র ১৪ বলে। সবমিলিয়ে ৪টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা ছিল তার ইনিংসে।

তামিম জানালেন, উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য মোটেই সহজ ছিল না। তবে পরিকল্পনা করেই এগিয়েছেন তারা, ‘আমরা যখন ব্যাটিং করতে আসি, এটা মোটেই সহজ উইকেট ছিল না। আমাদের শক্তিশালী অবস্থানে যেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমার মনে হয়, প্রথম ২৫ ওভার সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। বল টার্ন করছিল এবং ফাস্ট বোলাররাও সাহায্য পাচ্ছিল। তাই আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল যতটা সম্ভব সময় খেলে যাওয়া, স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে। আমাদের মনে মনে একটা লক্ষ্য ছিল, যেটা আমরা মুশফিকের ব্যাটিংয়ে পেয়ে যাই। আমরা আসলে লক্ষ্যটা পার করে ২০ রান বেশি করতে পেরেছি।’

তামিম-সাকিবের চোধ ধাঁধানো ব্যাটিংয়ের পর হয়তো অনেকেই বড় ভাবছেন না মুশফিকের ইনিংসটিকে। কিন্তু ১১ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় গড়া তার ৩০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটা না হলে বড় সংগ্রহ পাওয়া হতো না টাইগারদের।

এমএমআর/জেআইএম

Advertisement