বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, কিছু কিছু মানুষ আছে যে মনে করে নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেয়া লাগবে, এমনিকি যার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় সেও মনে করে জিতবে। আমাদের শুধু মনে রাখতে হবে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তারপরে নির্বাচনের আলোচনা। কারণ খালেদা জিয়াকে সঙ্গে করে আমরা যদি নির্বাচনের ময়দানে নামি ইনশাআল্লাহ আমরা বিজয়ী হবো।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘তাকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে গেলে জনগণের কাছে প্রশ্নের জবাব দিতেই জান বের হয়ে যাবে। তাই বন্ধুগণ যারাই যে স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন বাস্তবায়নের চাবিকাঠি ওখানেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।’
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী ভবনে ঢাকা মহানগর মহিলা দল (উত্তর) বাড্ডা এবং হাতিঝিল থানার কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজ আমরা বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমানের পরামর্শে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। কোনো রকমের বিভেদ নাই। আপনাদের কাছেও আহ্বান সবাই একসঙ্গে থেকে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং যে লড়াই সংগ্রাম হবে তাতে আমরা বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ। ’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। গণতান্ত্রিক পন্থায় এই দল তার রাজনীতি বাস্তবায়ন করতে চায়। আজকে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করে বিএনপির ক্যান্টমেন্টে জন্ম হয়েছে। আমি একজনকে বলতে ছিলাম ক্যান্টমেন্ট কি কোনো নিষিদ্ধ জায়গা? আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে রোজ গার্ডেনে যেখানে নতর্কীরা নাচানাচি করতো। তাতে কি হয়েছে? সেটা জনগণের বাড়ি ঘর নাকি? জন্ম যেখানেই হোক জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভাল।’
কোটা আন্দোলনে বিএনপির উস্কানি রয়েছে বিভিন্ন মহলের এমন সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাই জানে কোটা আন্দোলনের মূল নেতারা তো ছাত্রলীগের। আমি ৭১টিভিতে নিজে দেখেছি ছাত্রলীগের কোনো ভিপি বা জিএস এর বক্তব্য। কোটা সংস্কার ন্যায্য আন্দোলন। বিএনপি অন্যের হাতে খাবার খায় না, নিজের হাতে খাবার খায়।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নারীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই বলবে এই ৭৩বছর বয়সের নারীকে নিষ্ঠুরভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সহযোগিতা চাওয়া হলে আমার বিশ্বাস সবাই সেই সহযোগিতা করবে। কিন্তু তাদের কাছে আমাদের পৌঁছাতে হবে, যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যারা থানা কমিটির দায়িত্ব পাচ্ছেন তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, গ্রামে গ্রামে, বাড়ি বাড়ি যাবেন, মানুষকে সংগঠিত করার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পর সবচেয়ে বৃহৎ সংগঠন যেটা হতে পারে সেটা হলো জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। আপনারা হলেন জনসংখ্যার অর্ধেক।’
Advertisement
নজরুল বলেন, ‘মনে রাখতে হবে আমরা সবাই যেন আন্তরিকভাবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। শেখ হাসিনা তাকে মুক্তি দিতে চায় না। এই দুনিয়ায় তিনি সবচেয়ে খালেদা জিয়াকে ভয়পান। কারণ খালেদা জিয়া যত নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন প্রত্যেকটাতে বিজয়ী হয়েছেন।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি খালেদা জিয়াকে দেশ এবং জনগণের প্রয়োজনে রাজনীতির ময়দানে দরকার। জেলখানা তার জায়গা না। তার জায়গা জনগণের মধ্যে। আর সেটা সম্ভব করতে হলে আমাদের রাজপথে আন্দোলন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির প্রথম থেকেই আছি। অনেক দুঃসময় অতিক্রম করেছি, এবারও ইনশাআল্লাহ অতিক্রম করতে পারবো।’
ঢাকা মহানগরী নেত্রী পেয়ারা মোস্তফার সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদিকা সুলাতানা রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা হেলেন জেরিন খান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
কেএইচ/এমএমজেড/জেআইএম