ক্যাম্পাস

এই ছেলেরা যাবি না কেন, তোদের দাবি কী : রাবি প্রক্টর

কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের খালি পায়ের অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Advertisement

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের চলে যেতে নির্দেশ দেন।

এ সময় গতকাল সোমবার শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে অভিযোগ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন তারা। তবে প্রক্টর লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো লিখিত চেয়ে অবস্থানস্থল থেকে চলে যেতে ধমক দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা অবস্থান অব্যাহত রাখতে চাইলে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের ধমক দিয়ে বলেন, ‘এই ছেলেরা যাবি না কেন, তোদের দাবি কী?।’

Advertisement

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুক স্ট্যাটাসে খালি পায়ে অবস্থানের ঘোষণা দেন। ফরিদ উদ্দিন খান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে খালি পায়ে অফিসে যাব। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শামসুজ্জোহা স্যারের মাজারে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করব। খালি হাতে, খালি পায়ে এবং নীরবে যে কেউ কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে। কোনো স্লোগান না, বক্তৃতা না, না কোনো রাজনীতি। খালি পায়ের নীরব প্রতিবাদ বোঝাবে আমরা সভ্য সমাজের নাগরিক নয়, যেখানে বাক স্বাধীনতা আছে, যেখানে ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদের সুযোগ আছে।’

ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জোহা চত্বরে আসতে থাকে। শিক্ষকরাও আসতে থাকেন। উপস্থিত হন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হানা শামস ইসলাম, শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার বানু, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বায়তুল মোকাদ্দেসুর রহমান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ছাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

তবে ঘোষণা দেয়া শিক্ষক অবস্থানস্থলে আসতে পারেননি। তাকে আসতে বাধা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি বিএম মাহবুবুর রহমান। তাকে আটকানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিএম মাহবুবুর রহমান।

অন্যদিকে বেলা ১১টা থেকে সেখানে খালি পায়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলে প্রক্টর এসে বাধা দেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এ অবস্থান কর্মসূচি।

Advertisement

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ সময় প্রক্টর আবারও উপস্থিত হন। বাধা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা বলেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়টি আমাদের কাছে খারাপ লেগেছে। তাই আমরা এখানে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার জন্য দাঁড়িয়েছি। ১০ মিনিট অবস্থান করে চলে যাওয়ার কথা বলেন তারা। কিন্তু এই বিষয়কে ইস্যু করে বিএনপি জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এখন তারা চলে গেছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।

এএম/এমএস