জাতীয়

আড়মোড়া ভাঙছে, তবুও চেনা রূপে ফেরেনি ঢাকা

তখন সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়েছে তবুও রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেট অনেকটাই ফাঁকা। নেই কর্মব্যস্ত মানুষের হাঁটাচলা। অথচ দীর্ঘ যানজট আর গাড়ির শব্দ এখানকার চিরচেনা রূপ। সঙ্গে পথে পথে দুর্ভোগ, রাস্তা ও ফুটপাথে পথচারীদের ভিড়।

Advertisement

সেই অসহ্য যানজটের শহর রাজধানী ঢাকার ব্যস্ততম সড়কগুলো এখন ফাঁকা পড়ে আছে। অল্প কিছু মানুষের চলাচল, আর রাস্তায় হাতেগোনা কিছু গণপরিবহন।

যদিও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় কর্মক্ষেত্রে ফিরেছেন অনেকেই, তবুও বেশিরভাগ মানুষই এখনও রয়ে গেছেন গ্রামের বাড়িতে। তাই ঈদের কয়েক দিন পরও এর রেশ কাটেনি। যদিও ছুটি শেষে এবং কর্মক্ষেত্রে যোগদানের লক্ষ্যে প্রতিদিনই ঢাকা ফিরছেন মানুষ। যে কারণে বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাটে ঢাকা ফেরা মানুষের ভিড় বাড়ছে। এসব মানুষের আগমনের মধ্যে দিয়ে আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠবে রাজধানী ঢাকা। তবে পুরোপুরি চিরচেনা চেহারায় ফিরতে আরও দুই একদিন সময় লাগবে ঢাকার।

স্বাভাবিক সময় ভোর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত সব সময়ই কর্মব্যস্ত থাকে রাজধানীর গুলিস্থান এলাকা। তখন হেঁটে চলাই কষ্টকর হয়। সঙ্গে গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহনে তীব্র যানজট লেগেই থাকে। অথচ ঈদের চারদিন হয়ে গেলেও বুধবার দুপুরে অনেকটাই ফাঁকা ছিল পুরো গুলিস্থান।

Advertisement

শুধু রাজধানীর ফার্মগেট বা গুলিস্থানেই এমন ফাঁকা চিত্র নয়। মিরপুর, ধানমন্ডি, সাইন্সল্যাব, এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ, মালিবাগ, মগবাজার, বাংলামোটর, রামপুরা, বাড্ডা, খিলক্ষেত, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রাস্তায় যানবাহন, পথচারী, কর্মব্যস্ত মানুষের উপস্থিতি অনেকটাই কম। তবুও অনেকেই কাজের জন্য বেরিয়েছেন। যান চলাচলও করছে সব রাস্তায়। তবে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি এবং যানচলাচলের বর্তমান যে চিত্র চোখে পড়ে তা স্বাভাবিক ঢাকার নয়। ঈদ উদযাপন শেষে মানুষের ফিরে আসা শুরুর মাধ্যমে আড়মোড়া ভাঙছে, তবুও চেনা রূপে এখনও ফেরেনি ঢাকা।

রাজধানীর মিরপুর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটে গুলিস্থান এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, অন্য স্বাভাবিক সময় এখানে আসতে দেড়-দুই ঘণ্টার বেশি লাগলেও আজ মাত্র ৪০ মিনিটে পৌঁছেছি। ঈদ শেষে এখনও সব মানুষ এসে ঢাকা পৌঁছায়নি, তাই অনেকটাই ফাঁকা ফাঁকা ভাব। দুই একদিনের মধ্যেই চির চেনা রূপে ফিরবে ঢাকা।

মিরপুর থেকে মতিঝিলে চলাচলকারী বিকল্প বাসের চালক মোবারক হোসেন বলেন, পথে এখনও পর্যাপ্ত যাত্রী নেই। বাস অনেকটাই ফাঁকা, ২০/২৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্রিপ মারছি। এছাড়া পর্যাপ্ত গাড়ি-প্রাইভেট কারও রাস্তায় নামেনি তাই যানজটও নেই। তবে শিগগিরই আসল চেহারা ফিরে পাবে ঢাকা।

গুলিস্থান হকার্স মার্কেটের বিপ্লব ক্লথ স্টোরের দোকানি জামাল উদ্দিন বলেন, ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই দোকান খুলছি, কিন্তু কাস্টমার একদম নেই বললেই চলে। যেহেতু এখনও সব মানুষ ঢাকায় ফিরে আসেনি, তাই বেচা বিক্রিও শুরু হয়নি। তবে রাস্তায় চলাচল করে শান্তি পাওয়া যাচ্ছে। কারণ যানবাহন-মানুষের ভিড় একদম নেই। ঈদ ছাড়া অন্য কোনো সময় ঢাকার এমন রূপ দেখা যায় না।

Advertisement

এএস/এমএমজেড/পিআর