নতুন অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রস্তাবিত বাজেটে গুড়া দুধ আমদানিতে শুল্ক কমানোকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। একইসঙ্গে গুড়া দুধ আমদানিতে ৩০ শতাংশ এন্টিডাম্পিং ডিউটি আরোপের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
Advertisement
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সংগঠনটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য তুলে ধরেন সভাপতি মো. ইমরান হোসেন।
তিনি বলেন, দুধ উৎপাদনে সাধারণ খামারিরা যখন পারদর্শিতা দেখাতে শুরু করেছেন, সেই সময় বাজেটে গুড়া দুধের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী গুড়া দুধের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হলে দুগ্ধ খামারিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
ইমরান বলেন, ‘গুড়া দুধ আমদানির ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম শুল্ক হার ছিল ৫১ শতাংশ। পরবর্তীতে তা কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। যেখানে দেশে দুধের উৎপাদন বাড়ছে, খামারের সংখ্যা বাড়ছে, বেকার সমস্যার সমাধান হচ্ছে-সেক্ষেত্রে হঠাৎ করে গুড়া দুধের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়া দুগ্ধ খামারিদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেবারই সামিল।’
Advertisement
দেশে দুধ উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০১০-১১ অর্থবছরে দুধ উৎপাদন হয় ২৯ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন; যা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৯২ দশমিক ৮৩ লাখ মেট্রিক টন হয়েছে। এখন গুড়া দুধের আমদানি শুল্ক কমালে খামারিরা নিরুৎসাহিত হবেন। ফলে দুধের উৎপাদন কমে ৫০ লাখ মেট্রিক টনের নিচে চলে আসবে।’
এ সময় তিনি দুগ্ধ খামারিদের রক্ষায় গুড়া দুধের আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানান। সেইসঙ্গে ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত এন্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশে যে দুধ উৎপাদন হচ্ছে আমরা তাই ব্যবহার করতে পারছি না। দুধ বিক্রি করতে না পেরে অনেক সময় খামারিরা পানিতে দুধ ফেলে দিচ্ছেন। তাহলে কেনো বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি করতে হবে?’
বিদেশ থেকে আমদানি করা গুড়া দুধ নিম্নমানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিম্নমানের হওয়ার পরও দেশে ক্রমান্বয়ে গুড়া দুধের আমদানি বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে গুড়া দুধের আমদানি ছিল ৭১ হাজার মেট্রিক টন; যা বেড়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে হয়েছে ১২০ হাজার মেট্রিক টন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মিল্ক ভিটার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় দুগ্ধ ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান, এসএমই কর্পোরেশনের পরিচালক আজাদ চৌধুরি, বিডিএফএর সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান প্রমুখ।
Advertisement
মিল্ক ভিটার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মিল্ক ভিটার এলাকাতে প্রতিদিন সাড়ে ৩ লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। আমরা এই দুধই নিতে পারি না। এমন পরিস্থিতিতে গুড়া দুধের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়া সঠিক হবে না।’
এমএএস/এসআর/জেআইএম