লাইফস্টাইল

দীর্ঘ সময় বসে কাজ করায় যে ক্ষতি হচ্ছে আপনার

গবেষণা বলছে, দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার কারণে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাহলে এবার হিসেবে করুন মাত্র ৪-৫ ঘন্টা বসে থাকলে হার্টের কতটা ক্ষতি হতে পারে। এখানেই শেষ নয়, গবেষণা অনুসারে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকে। যত শরীরের ওজন বাড়ে, ততো ডায়াবেটিস, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মতো মারণ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে।

Advertisement

মেডিকেল কলেজ অব উইলকনিসের গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় জানা গেছে, অনেক সময় ধরে এক জায়গায় বসে থাকলে আমাদের পেশীর ভেতরে একাধিক এনজাইমের চরিত্র বদলে যেতে শুরু করে। যার প্রভাবে মারাত্মক ক্ষতি হয়। আর যদি কাজের চাপে এমনটা করতেই হয়, তাহলে শরীরের ক্ষতি কমাতে এই নিয়মগুলো মেনে চলতে পারেন।

১. খেলাধুলা করা জরুরি: দীর্ঘ সময় বসে কাজ করলে ভিতর এবং বাইরে থেকে শরীর ভাঙতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বডি পসচারও বেড়ে যায়। এই কারণে সপ্তাহে দুদিন একটু খেলাধুলো করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। আসলে এমনটা করলে সারা শরীরে রক্তের প্রভাব বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে জয়েন্টের সচলতাও বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীর একদিকে যেমন রোগমুক্ত হয়, তেমনি দেহের কর্মক্ষমতাও বাড়ে।

২. কম্পিউটারের উচ্চতা যেন ঠিক থাকে: বসে থাকাকালীন আপনার ল্য়াপটপ বা কম্পিউটার থাকবে একেবারে চোখের সমান্তরালে অথবা চোখের লেভেল থেকে মাত্র ১০ ডিগ্রি নিচে। এমনটা না হলে কিন্তু ঘাড় এবং পিঠের উপর মারাত্মক প্রেসার পরবে। আর এইভাবে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে স্পন্ডাইলাইটিস বা ব্যাকপেইন মতো সমস্যা যে বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সাবধান!

Advertisement

৩. কিছু সময় পর পর উঠে দাঁড়াবেন: টানা এক ঘন্টা বসে থাকার পর যদি কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা যায়, তাহলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়। তাই এবার থেকে ঘড়ি ধরে এক ঘন্টা অন্তর অন্তর কয়েক মিনিট কাজ বন্ধ করে একটু দাঁড়িয়ে পরবেন, তাহলেই আর কেনও চিন্তা থাকবে না। আর যদি কাজের চাপে এমনটা করার সুযোগ না থাকে, তাহলে কম্পিউটারটাকে বই বা ফাইলের উপরে তুলে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কাজ করবেন। এমনটা না করলে জানেনই কী ক্ষতিটাই না হতে পারে আপনার সঙ্গে।

৪. সারা দিন ধরে যখন সুযোগ পাবেন হাঁটবেন: যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তারা যদি দিনে কম করে ১০,০০০ স্টেপ নেন, তাহলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে অফিসের পরে হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করুন। এমনটা করলে মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়বে। ফলে মন-মেজাজ যেমন চাঙ্গা হয়ে উঠবে, তেমনি হাঁটার কারণে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার খারাপ প্রভাবও শরীরে কম পরবে।

৫. ঘোরাঘুরি জরুরি: কাজের ফাঁকে ওয়াশরুম যাওয়ার অজুহাতে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিতে ভুলবেন না। এমনটা করলে শরীরের নিচের অংশে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যাবে। ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমবে, তেমনি অন্যান্য শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে।

৬. পমোড্রা টেকনিক: কী এই পমোড্রা টেকনিক? বিষয়টা খুব সহজ! কাজ শরু করার পর ২৫ মিনিট সেট করে স্টপ ওয়াচ চালিয়ে দিন। এই ২৫ মিনিট খুব মন দিয়ে কাজ করুন। সময় হয়ে গেলেই মিনিট পাঁচেক হেঁটে আসুন বা জাম্পিং জ্যাক-এর মতো এক্সারসাইজ করে নিন। তারপর আবার ২৫ মিনিটের জন্য কাজে লেগে পরুন। এমনভাবে যদি সারা দিন কাজ করতে পারেন, তাহলে যতক্ষণই বসে থাকুন না কেন শরীরের কোনও ক্ষতি হবে না।

Advertisement

এএ