টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ইতোমধ্যে ময়দানে তাঁবু টাঙানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা ময়দানে কাজ করছেন। বলা যায়, সার্বিক কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন।
Advertisement
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েতের প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে আগামী ১২ জানুয়ারি। তিন দিনব্যাপী এ ধাপে দেশের ১৬টি জেলার মুসল্লিরা ইজতেমায় সমবেত হবেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় ধাপে আরও ১৬টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসে খুঁটি স্থাপন, তাঁবু টাঙানো, নামাজের লাইন তৈরি প্রভৃতি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। শুক্রবার দিনব্যাপী ও মুসল্লিদের এসব কাজ করতে দেখা গেছে।
ঢাকার মান্ডা মসজিদ থেকে ৪৮ জনের তাবলিগের একদল মুসল্লি শুক্রবার সকালে ইজতেমা মাঠে এসে মাঠ তৈরির কাজে যোগ দেন।
Advertisement
তাদের আমির মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা ও তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দলবেঁধে ইজতেমা মাঠে এসেছেন। সাথীদের নিয়ে তাঁবুর জন্য খুঁটি স্থাপনের কাজ করেছেন।
ঢাকার মুগদা এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুল বাতেন মাদরাসার হাফেজি ছাত্র মো. আল আমীন বলেন, জান এবং মাল আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় ব্যয় করার জন্য ইজতেমা মাঠে কাজ করতে এসেছি। আমাদের সঙ্গে রয়েছেন প্রায় ৪০ জনের মতো সাথী।
ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের নেটওয়ার্ক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক মজিবুর রহমান জানান, ইজতেমা মাঠে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এবার ২৪টি স্থায়ী খুঁটি স্থাপনের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ১২টি খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। আরও ১২টি খুঁটি ইজতেমার চূড়ান্ত প্রস্তুতির আগেই শেষ করা হবে।
ইজতেমা মাঠের মুরুব্বী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন বলেন, এবারে প্রথম ধাপে যে ১৬টি জেলা থাকছে সেগুলো হল ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, নড়াইল, মাগুরা, পঞ্চগড়, শরীয়তপুর, নীলফামারী, নাটোর ও বগুড়া।
Advertisement
১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপ। ওই ধাপেও মোট ১৬ জেলার মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন। দুই ধাপে মোট ৩২ জেলার মুসল্লি থাকবেন এবারের বিশ্ব ইজতেমায়।
গাজীপুর জেলায় এবছর অংশগ্রহণের তালিকায় নেই। কিন্তু টঙ্গীর বোর্ড বাজার থেকে তাবলিগ জামাতের ঢাকা এলাকা শুরু। সে হিসেবে গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ এলাকা ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে এবার ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবে।
টঙ্গী রেলওয়ে জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার রাকিবুর রহমান জানান, ইজতেমা উপলক্ষে বরাবরের মতোই এবারও বিশেষ ট্রেন থাকবে। মোনাজাতের দিন সব ট্রেন টঙ্গী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। তবে কতগুলো বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ এবং কোনোগুলোর যাত্রাবিরতি হবে সে ব্যাপারে এখনও কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ রাসেল বলেন, এবার ইজতেমা ময়দান ও এর আশপাশে ১৫টি ওয়াচ টাওয়ার, ৪০টি সিসিটিভি থাকবে। গতবারের চেয়ে এবার বিশেষত পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন সৈয়দ মঞ্জুরুল হক জানান, ইজতেমায় চিকিৎসক জনবলের প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। তবে এবার বাড়তি হিসেবে জেলার বাইরে থেকে প্রায় ৪০ জন চিকিৎসক রাখা হবে।
মো. আমিনুল ইসলাম/এএম/পিআর