জাতীয়

জ্বর এসেছে মুক্তামণি’র : খাওয়ায় কমেছে রুচি

উপরে ঝুলন্ত ফ্যানটি বন্ধ। পাশে টেবিল ফ্যান ঘুরছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেকে) বিছানায় কাঁথা গায়ে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণি। বুধবার সকালে ডাক্তার দেখে যাওয়ার পর জ্বর এসেছে মুক্তামণির। জ্বরের কারণে কেঁপে উঠছে শরীর। কথা বলাতেও যেন দম নেই। পা নাড়িয়ে বাবা-মাকে ডেকে মুক্তামণি বলেছে জ্বরের কথা। পরে থার্মোমিটারে মেপে দেখা যায় ১০১ ডিগ্রি জ্বর মুক্তামণির।

Advertisement

বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের ছয়তলার ৬০৪ নং কক্ষে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুক্তামণির জ্বরের কথা। জ্বর মাপার পর সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ফোন করে আপডেট জানান বাবা ইব্রাহিম।

চিকিৎসকরা বলছেন, প্রপার (উপযুক্ত) ট্রিটমেন্ট’ই চলছে মুক্তামণির। এমন অপারেশনে এরকম জ্বর আসা স্বাভাবিক। জ্বর আসবে ছেড়েও যাবে।

কেবিনের পাশের বিছানায় বসে মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম জাগো নিউজকে বলেন, সর্বশেষ গত শনিবার হাতের ব্যান্ডেজ খুলে নতুন ড্রেসিং করে দিয়েছেন চিকিৎসক-নার্সরা। হাতের ক্ষতের কারণে ব্যান্ডেজটি ভিজে যাচ্ছে। এতদিন মায়ের হাতে তোলা খাবার খেয়ে আসছে মুক্তামণি। কিন্তু আগের তুলনায় যেন কমেছে খাওয়ায় রুচি। শরীর নাকি বেশ দুর্বল লাগছে মেয়ের। সেজন্য মনটা খারাপ লাগছে।

Advertisement

ছোট্ট ছেলেকে কোলে নিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে মা আসমা খাতুন। হাত নাড়ানোর মতো শক্তি নেই মুক্তামণির। পা নেড়ে ও ধীরকণ্ঠে মাকে ডেকে বলে কাঁথা দিয়ে জড়িয়ে দিতে। জানায় জ্বরের কথা। পরে থার্মোমিটারে জ্বর মেপে দেখা যায় ১০১ ডিগ্রি জ্বর।

মুক্তামণির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মা আসমা খাতুন বলেন, মুক্তামণি এখন ভালো আছে। ডাক্তাররা জ্বরের ওষুধ দেবেন। আবারও অপারেশন হবে বলে শুনেছি। কিন্তু কবে হবে জানি না।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তামণির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। মানসিক শক্তিও আছে বেশ। জ্বর এসেছে শুনলাম। এটা কোনো সমস্যা না। তার চিকিৎসায় বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই। অপারেশনের পর একটু-আধটু জ্বর আসা স্বাভাবিক। জ্বর আসবে আবার ছেড়েও যাবে।

গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণির সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে মুক্তাকে বিনামূল্যে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তার চিকিৎসার যাবতীয় দায়ভার বহনের দায়িত্ব নেন। ঢামেকে ভর্তি করা হয় মুক্তাকে। মুক্তার চিকিৎসার জন্য একটি বোর্ড গঠনসহ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢামেক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা মুক্তামণির চিকিৎসকরা জানান, মুক্তামণির অস্ত্রোপচার এখানে সম্ভব নয়।

Advertisement

অবশেষে গত ১২ আগস্ট প্রথম অপারেশন সম্পন্ন হয় মুক্তার। চিকিৎসকরা ওই অপারেশনকে ‘সফল’ বলে দাবি করেন।

একে/আরআইপি