ডিভাইসটি তৈরি করার জন্য দরকার একটি মোবাইল ফোন আর দু’টি সিমকার্ড। ওই মোবাইল ফোনে রিং দিলেই চালু হবে গভীর নলকূপ। আবার রিং দিলে চালু নলকূপ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পানি ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধ হওয়ায় আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন কৃষক। এমন সুবিধা পাওয়ায় সেচ পাম্প মালিক এবং কৃষকদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
Advertisement
যুগান্তকারী এ ডিভাইসটি তৈরি করেছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মনিরুল ইসলাম।
ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছে ছোট্ট এই ডিভাইস। যা রিমোট কন্ট্রোল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এটি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি শ্রমিক খরচ কমে যাওয়ায় কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমে যাচ্ছে। ডিভাইসটি সারাদেশের সেচ পাম্পগুলোতে ব্যবহার করতে পারলে কৃষি খাতে মোটা অংকের অর্থ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) অল্প খরচে সেচ সুবিধা দিতে চালু করে ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় মেহেরপুর জেলায় ৪৫টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। আরও ৫টি চালু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। কম খরচে সেচ সুবিধা পেলে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ায় কৃষক লাভবান হবে।
Advertisement
একেকটি গভীর নলকূপ থেকে এক হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হয়। সেচ কাজ পরিচালনার জন্য প্রতিটি নলকূপ থেকে ১২শ মিটার পর্যন্ত সেচ নালা তৈরি করা হয়েছে। এ বিপুল পরিমাণ জমিতে সেচ দিতে গিয়ে বেশ কিছু বিদ্যুৎ ও পানি অপচয় হয় এবং শ্রমিকও লাগে বেশি। এ অপচয় রোধ করতে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ডিভাইসটি আবিষ্কার করেছেন মনিরুল ইসলাম।
উদ্ভাবক মনিরুল ইসলাম জানান, একজন ছাত্রের দেয়া ধারণা থেকেই ডিভাইস তৈরিতে মনযোগী হন। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর তিনি সফল হন। এখন অনেকেই ডিভাইস তৈরি করে নিতে তার কাছে ভিড় জমাচ্ছেন। ডিভাইসটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। সরকারের সহযোগিতা পেলে সারা দেশে এটি ছড়িয়ে দিতে চান তিনি।
তিনি এরকম আরও একটি ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন যেটার মাধ্যমে পানির ট্যাংকিতে পানি তোলার মটর আপনা আপনি চালু ও বন্ধ করা যায়।
মেহেরপুর বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহ জালাল আবেদীন আরও জানান, রিমোট কন্ট্রোলটি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ ও পানির অপচয় কম হচ্ছে। এটি ব্যবহার করতে জেলার সব পাম্প মালিককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সফল হলে সারা দেশে এ প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/এফএ/আরআইপি