ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এমপি সেলিম ওসমান কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
Advertisement
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কিছুক্ষণ পরই তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রবেশ করেন শ্যামল কান্তি ভক্ত।২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মোর্শেদা বেগম। পাশাপাশি ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ এনে শ্যামল কান্তিকে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের নির্দেশে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় গত বছরের মে মাসে। এর দুই মাস পর মামলাটি করেন ওই শিক্ষিকা।এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেয়ার জন্য তার কাছ থেকে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরে তার কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু তাকে এমপিওভুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ ঘটনায় গত বছরের ২৭ জুলাই তিনি আদালতে মামলা করেন।আদালত সূত্র জানায়, আদালত বন্দর-থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। এ বছরের ১৭ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।শ্যামল কান্তির আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আদালত যেহেতু শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।এদিকে, বরাবরই শ্যামল কান্তি ভক্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার দাবি, তাকে চাপে রাখতেই প্রভাবশালী এক ব্যক্তির নির্দেশে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি এখানে ন্যায়বিচার পেলাম না। একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে আমাকে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিতভাবে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে ঘুষের অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি কখনো এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। যে সময় ঘুষ নেয়ার কথা বলা হয়েছে, তখন বিদ্যালয় শীতলকালীন বন্ধ ছিল।শাহাদাত/এমএএস/পিআর
Advertisement