তিন ও ১৮ মাস বয়সী দুই শিশুকে বাইরে রেখে তাদের দুই মাকে অভিযোগ ছাড়াই ১৩ ঘণ্টা থানা হাজতে আটক রাখায় মাদারীপুর সদর থানার ওসিসহ দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
একই সঙ্গে আগামী ৮ মে’র মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ প্রধানকে (আইজি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুই পুলিশ সদস্য আদালতে হাজিরের পর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে পুলিশের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন ও আইনজীবী কাজী সাজাওয়ার হোসেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওয়াজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ।
Advertisement
পরে ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন বলেন, দুই পুলিশ সদস্যকে (ওসি ও এসআই) মাদারীপুর সদর থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন। আর ঘটনা তদন্ত করে ৮ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ওই ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেসব প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার সোমবার (২০ মার্চ) রিট আবেদন করেন।
পরে তিনি বলেন, গত ১২ মার্চ (রোববার) সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি বিরোধপূর্ণ জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলার বিষয় জানতে চান। পনির এ বিষয়ে কিছু জানে না বললে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে থাপড় দেয়। এক পর্যায়ে পনির পুলিশের সঙ্গে বাক-বিতাণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়।
একপর্যায়ে পনির, তার বড় ভাই ও বোনের ঘরের মূল্যাবান আসবারপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্রসহ রান্নার চুলাও ভেঙে ফেলা হয়।এসময় পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ে স্ত্রী আকলিমা বেগমকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়।
Advertisement
এসময় ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে বাড়িতে রেখে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
রিটের পর ২১ মার্চ হাইকোর্ট ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহতাবকে তলব করেন। বুধবার তারা হাজির হয়ে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এসময় আদালত বলেন, এখনি ক্ষমা নয়। আগে তদন্ত রিপোর্ট আসুক। তারপর দেখা যাবে।
এফএইচ/এএইচ/জেআইএম