দুই শিশুকে বাইরে রেখে তাদের মাকে থানায় আটক রাখার ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার ওসিসহ দুই পুলিশ সদস্যকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৯ মার্চ সদর থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহতাবকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।একইসঙ্গে অমানবিকভাবে দুই দুগ্ধশিশুর মাকে ১৩ ঘণ্টা আটক রাখার ঘটনাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিআইজি, মাদারীপুর পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
Advertisement
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওয়াজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ।রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তাপস কুমার বিশ্বাস।
‘দারোগার ক্রোধের শিকার দুই মায়ের ১৩ ঘণ্টা ভোগান্তি’শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার ২০ মার্চ (সোমবার) রিট দায়ের করেন। রিটকারী আইনজীবী রানা কাওসার জানান, গত ১২ মার্চ সকাল ১০টার দিকে বিবাদমান একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার বিবাদমান জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান। মামলা সর্ম্পকে পনির কিছু জানে না বললে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপ্পর দেন।
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে পনির পুলিশের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ সময় পনির ও তার বড় ভাই-বোনের ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসনসহ রান্নার চুলাও ভেঙে ফেলে এবং পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আকলিমা বেগমকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
Advertisement
এ সময় ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু এবং আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে। পরে ওইদিন রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে সই নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এই ঘটনায় ওই শিশুদের বাইরে রেখে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটক ছিলেন দুই মা।
এফএইচ/আরএস/ওআর/পিআর