শততম টেস্টে দারুণ এক জয় পেলাম। অভিনন্দন মুশফিকদের। অভিনন্দন সকল বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের। ওদের পেরেরা আর লাকমলের জুটি দারুণ ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সকল শঙ্কা কাটিয়ে আমরাই জিতলাম। এ জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। জয়টা হয়তো আরও বড় হতে পারতো। তবে জয়তো জয়ই। আমি ভীষণ খুশি।
Advertisement
এ টেস্ট জয়ে শুধু আমরা শততম টেস্টের মাইলফলককে স্মরণীয় করে রাখিনি; শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট সিরিজও ড্র করতে পারলাম। এটাও অনন্য অর্জন। আমাদের এর আগের জয়গুলো দেশের মধ্যেই। দেশের বাইরেও যে আমরা ভালো খেলতে পারি তার উদাহরণ। এছাড়া এ টেস্ট জয়ে আমরা ওয়ানডেতে দারুণ আত্মবিশ্বাসী থাকবো। আশা করি ওয়ানডেতে সিরিজ আমরাই জিতবো।
আজকের এ ম্যাচে কিন্তু আমরা বেশ কিছু শিক্ষা পেয়েছি। প্রথম ব্যাপার হলো একটা বড় জুটি যে একটা দলকে জিতিয়ে দিতে পারে তা দেখলাম। তামিম-সাব্বিরের জুটিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওরা ওদের স্বাভাবিক ব্যাটিংটাই করেছে। আর ওদের পেরেরা আর লাকমলের কাছ থেকেও কিন্তু একটা শিক্ষা পেয়েছি। টেল এন্ডারদের লড়াই দেখার মত ছিলো। আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো আমাদের ড্র করার জন্য খেলতে হতো।
১৯১ রানের লক্ষ্যটাও সহজ ছিলো না। আমাদের ব্যাটসম্যানদের স্বাভাবিক ব্যাটিংয়েই জিততে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কথা কেউ ভয় পায়নি। বল টু বল খেলেছে। শেষ দিকে কিছু উইকেট পড়ে গিয়ে ম্যাচটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। ছয়টা উইকেট হারানোর কথা ছিলো না। তবে মুশফিক যদি ওই সময়ে আউট হয়ে যেত তাহলে কি হতো আমি জানি না। রিভিউ থাকায় বেঁচে গিয়েছি।
Advertisement
গলে প্রথম টেস্টেও যদি আমরা এভাবে খেলতাম তাহলে ওই টেস্টের ফলাফল আমাদের দিকেই আসতো। আমাদের বোলারদের শরীরি ভাষা এ টেস্টের শুরু থেকেই চমৎকার ছিল। ফিল্ডিংও আগের টেস্টের চেয়ে ভালো হয়েছে, ক্যাচ মিস কম হয়েছে। এ সকল কারণেই আমরা জিততে পেরেছি। এটাও আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক যে গলের ভুলগুলো অনেকটাই শুধরাতে পেরেছি।
এ টেস্ট সিরিজে কিন্তু আমরা আন্ডারডগ ছিলাম না। ফেভারিট হয়েই মাঠে নেমেছিলাম। যদিও ঘরের মাঠে সবসময়ই শ্রীলঙ্কার জন্য দুর্গ। তারপরও অভিজ্ঞতা ও শক্তির দিক থেকে আমরাই এগিয়ে ছিলাম। প্রথম ম্যাচটা নিজেদের মত খেলতে না পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছি।
আগের দিনই বলেছিলাম দলকে জয় পেতে হলে তামিমকে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলতে হবে। আর তামিম নিজের দায়িত্বটা দারুণভাবে পালন করেছে। ও যদি আগে আউট হয়ে যেত তাহলে হয়তো ভিন্ন ফলাফল হতে পারতো। সাব্বিরও দারুণ ব্যাটিং করেছে। চার নম্বরে মাহমুদউল্লাহর জায়গায় ব্যাটিং করতে নেমে নিজেকে প্রমাণ করেছে।
সাকিব আজকেও দারুণ বোলিং করেছে। এ টেস্টে শুরু থেকেই দারুণ বল করেছে সে। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলারের কাছে এমন কিছুই আমরা আশা করি। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ভাগ্যটা ওর সঙ্গে ছিলো না। বলটা উইকেট ঘেসে গেলো আর বেল পড়লো তার অনেক পর।
Advertisement
সর্বপরি এটা ছিল একটি পুরোপরি দলীয় জয়। শুধু সাকিব-তামিম না প্রথম ইনিংসে মোসাদ্দেক ও মুশফিকের ব্যাটিংও ছিল দারুণ। প্রথম ইনিংসে মোসাদ্দেকের ওই ইনিংসে আমরা লিড পেয়েছিলাম। ওই লিডই কিন্তু শেষ পর্যন্ত পার্থক্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বল হাতে মোস্তাফিজ-মিরাজরা খুবই নিখুঁত বোলিং করেছে। আগামীতেও আমরা এমন পারফরম্যান্স আশা করি। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই সিরিজই এ ধারা অব্যাহত রেখে আমাদের আবারও গর্বিত করবে।
আরটি/আইএইচএস/জেআইএম