অর্থনীতি

চামড়ার দাম নির্ধারণে ব্যবসায়ীদের টালবাহানা

ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও এখনো নির্ধারণ হয়নি চামড়ার দাম। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য ৪০-৪৫ টাকা নির্ধারণ করলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে শুক্রবারের মধ্যে পুনরায় তা নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে। চামড়া ব্যবসায়ীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য ৪০-৪৫ টাকা নির্ধারণ  করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের কাছে দরপ্রস্তাব জমা দেয়। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখান করে গত মৌসুমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দর ঠিক করতে নির্দেশনা দিয়েছে। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বৈঠক করে ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সিনিয়র সচিবকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলটি দেখা করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে। বাণিজ্যমন্ত্রী তাদের নতুন দর ঠিক করে শুক্রবারের মধ্যে ঘোষণার নির্দেশ দেন।মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, কুরবানির ঈদ এলেই একটি চক্র বিশ্বব্যাপী চামড়ার দাম কমানোর পাঁয়তারা করে। এ চক্রের খেয়ালিপনায় গত কয়েক বছর ধরে কাঁচা চামড়ার দাম কমছে। কিন্তু দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী ‘ক্রাস্ট ও ফিনিশড’ লেদারের দাম বাড়ছে। এমনকি বাংলাদেশ থেকেও প্রতি বছর ‘ক্রাস্ট ও ফিনিশড’ লেদার রফতানি বাড়ার সূচক অকল্পনীয়ভাবে ঊর্ধ্বমুখী।কাঁচা চামড়ার দর কমার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আরব দেশগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই এবং মধ্য এশিয়ার মুসলিম দেশগুলোতে প্রতি বছর পশু কুরবানি দেওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এতে বিশ্বের মোট চাহিদার অর্ধেকের বেশি চামড়া এই একদিনেই সংগ্রহ করা যায়। মাফিয়ারা এ সুযোগটি গ্রহণ করছে।সচিব বলেন, দরে গত বছরের চেয়ে খুব বেশি নড়-চড় হবে না বলেই ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। গত বছর দর ৫০ টাকা বর্গফুট থাকলে এবারও তাই রাখার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কাঁচা চামড়া রফতানিকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমদ বলেন, গতবারের চেয়ে এবার দর কমানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয় গত বছরের দরই রাখার কথা বলেছে। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করা হবে।গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর নির্ধারণ করেছিলেন ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে এর দর ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। খাসির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা। আর বকরি ও ভেড়ার চামড়ার দর ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা।২০১৪ সালে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতিফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে এ দর ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, খাসির চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও বকরির চামড়ার দর ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা।২০১৩ সালে দর ছিল আরো বেশি। তখন ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দর ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। ঢাকার বাইরে এর দর ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।এমইউএইচ/এএইচ/বিএ

Advertisement