জাতীয়

জুলাই যোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থানে আইসিটি বিভাগের সহায়তার ঘোষণা

জুলাই যোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থানে আইসিটি বিভাগের সহায়তার ঘোষণা

জুলাই আন্দোলনে আহত ও অংশগ্রহণকারী তরুণদের আত্মকর্মসংস্থানে ডিজিটাল স্কিল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহায়তা করবে আইসিটি বিভাগ।

Advertisement

বুধবার (১৬ জুলাই) আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি অডিটোরিয়ামে জুলাই শহীদ দিবস ও গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা জানানো হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি বলেন, আজ আমাদের জন্য একটি দুঃখের দিন। যে তরুণরা তাদের জীবন দিয়ে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন আমরা কতটা শ্রদ্ধাশীল থেকে সেই দায়িত্ব পালন করেছি আজ তা বুঝে নেওয়ার দিন। আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি অনেক ক্ষেত্রেই গত এক বছরে আমরা সফল হ‌ইনি। আগামী দিনে কীভাবে সফল হতে পারি সে পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। প্রতিদিন যখন বাসায় ফিরি আমার মনে হয়, অনেক কাজ বাকি। আমি ছাত্রদের সামনে দাঁড়াতে পারি না, লজ্জা লাগে।

এ সময় তিনি আবেগতাড়িত হয়ে যান।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমরা আইসিটি থেকে তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারেনি। এই বিষয়টি আমাকে তাড়িত করে। আগামী মাসগুলোতে আমরা চেষ্টা করব জুলাইয়ে আহতদের আইসিটি স্কিল দিয়ে তাদের একটা ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় জীবনের নিশ্চয়তা দিতে।

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে নাগরিক সেবা নামে একটা প্ল্যাটফর্ম চালু করেছি। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে মানুষকে হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সফটওয়্যার পার্কগুলো করা হয়েছে যেগুলো দাঁড়িয়ে আছে বিল্ডিং হিসেবে। যার মধ্যে ট্রেনিং কিংবা স্কিল ডেভেলপমেন্টের কোনো ব্যবস্থা নেই। সেখানে স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালুর বিষয়ে আমরা কাজ করছি।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, বাঙালি মরতে জানে, হারতে জানে না। ৫ আগস্টের পর আমাদের অগ্রগতি কম নয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর মধ্যে বিভাজনের জন্য চক্রান্ত চলছে, গত ১৫ বছর অবৈধভাবে অর্জিত টাকা এ চক্রান্ত সফল করতে ব্যয় করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তা সফল হতে দেবো না।

আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা এ সময় বলেন, আমরা দেখেছি জাতির ক্রান্তিলগ্নে তরুণরাই ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়ে আমাদের আলোর পথ দেখিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ স্লোগান ছিল- যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাড়াও তুমিই বাংলাদেশ। আমরা প্রবীণরা কিন্তু রুখে দাঁড়াতে পারিনি, তরুণরাই রক্ত দিয়ে অন্যায়, অবিচার, জুলুমের এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। আমরা যদি তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে না পারি, তারা যে পথ দেখিয়ে গেছে সে পথে চলতে না পারি তাহলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে।

Advertisement

জুলাই যোদ্ধা এবং ছাত্র প্রতিনিধি মো. আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য জুলাই আন্দোলন হয়েছে। তিনি বিচার‌ এবং যথাযথ সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করেন।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আহসান ইয়াসির শারার এ সময় বলেন, আমরা এখনও খুনিদের বিচার দেখছি না। পুলিশ এখনও ফাংশনাল না । প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও তাদের ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রত্যাহার করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি এর অধ্যাপক ড..এম মেজবাহ উদ্দিন সরকার।

বিসিসির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. মেহেদী হাসানসহ আইসিটি ডিভিশনের অধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং আন্দোলনে আহত ছাত্র ছাত্রীরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

এমডিএইচআর/এএমএ