লাইফস্টাইল

বর্ষায় শিশুকে ডায়পার র‌্যাশ থেকে বাঁচাবেন যেভাবে

বর্ষায় শিশুকে ডায়পার র‌্যাশ থেকে বাঁচাবেন যেভাবে

বর্ষাকালে যেকোন ভেজা জিনিসই একটু বেশি স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে। তাই এসময় শিশুদের দীর্ঘক্ষণ ডায়াপার পরিয়ে রাখলে তা থেকে ত্বকের নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে। অনেক মা-বাবাই প্রায় তিন বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানকে ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। ডায়পার নির্ভরতার কারণে টয়লেট ব্যবহার করতে শিখতেও দেরি হয় শিশুর।

Advertisement

আবার এটি ব্যবহারের সময়, নিয়ম ও পদ্ধতি না জানার কারণে শিশুর অস্বস্তি হয়, তা ছাড়া ত্বকও জ্বালা করে। বর্ষার সময়ে ভেজা, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ডায়াপার থেকে ত্বকে র‌্যাশও হয় শিশুর। সেখানে জীবাণু সংক্রমণও ঘটতে পারে। তাই জেনে নিন ডায়াপার থেকে শিশুর ত্বকে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে-

১. শিশুর ত্বকে ধারাবাহিক ভাবে ফুসকুড়ি, চুলকানির সমস্যা হতে পারে। এমন হলে গুরুত্ব নিয়ে দেখা প্রয়োজন।

২. এক থেকে পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে থাকা শিশুদের মধ্যে একজিমা দেখা দিতে পারে। এগুলো দেখতে র‌্যাশ, ফুসকুড়ি, লালচে ফোঁড়ার মতো হতে পারে।

Advertisement

৩. আরও এক ধরনের র‌্যাশ হয়, যাকে বলে আরটিকেরিয়া। দুই থেকে তিন বছরের শিশুদের ত্বকে এমন অ্যালার্জি হতে পারে।

শিশুর ত্বকে এসব সমস্যার সমাধানে অভিভাবকরা যা খেয়াল রাখবেন-

১. ডায়াপার কেনার আগে অবশ্যই ভাল করে এর কাপড় যথেষ্ট নরম ও সুতি কিনা দেখে নিন। কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিন।

২. বাইরে বেরোনোর সময় শিশুকে ডায়াপার পরালে, একটু পর পর তা পরীক্ষা করুন। ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডায়াপার বদলে দিন।

Advertisement

৩. রাতভর শিশুকে ডায়াপার পরাবেন না। এতে শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। একটানা ডায়াপার পরিয়ে রাখলে ত্বকে ঘষা লেগে র‍্যাশ, অ্যালার্জি হয়। ত্বক লালচে হয়ে ফুলে যায়।

৪. ডায়াপার থেকে যে র‌্যাশ হয়, তাকে চিকিৎসার ভাষায় বলে ‘ডায়াপার ডার্মাটাইটিস’। অনেক সময় সেখানে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়। ডায়াপারের জায়গায় লালচে দাগ দেখা দেয় অনেক শিশুর। একে বলে 'সেবোরিক ডার্মাটাইটিস'। এমন লক্ষণ দেখা দিলে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৫. শিশুর ত্বকে কখনই বড়দের সাবান ব্যবহার করবেন না। শিশুর জন্য কম ক্ষারযুক্ত, ঠিক পিএইচ ব্যালান্স (৫.৫) রয়েছে, এমন সাবান ব্যবহার করুন।

৬. শরীরের ভাঁজযুক্ত জায়গা, অর্থাৎ কুঁচকি, বাহুমূল, নিতম্বে প্রত্যেক দিন সাবান দিতেই হবে। সপ্তাহে দুই-তিন দিন সারা গায়ে ভাল করে সাবান মেখে শিশুকে গোসল করান। ‘ছোটমানুষ’ বলে গোসল এড়িয়ে যাবেন না কখনও।

৭. সাবানের পরিবর্তে লিকুইড সোপ ব্যবহার করা আরও ভাল। এর পিএইচ ব্যালান্স শিশুদের ত্বকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি করা হয়।

৮. গরমের দেশে ঘন ক্রিমের দরকার কমই পড়ে। সে ক্ষেত্রে বডি লোশন ভাল কাজ করে। এগুলো শিশুর কোমল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৯. গোসলের আগে শিশুদের তেল মালিশ করার চল আমাদের বহুদিনের। এতে পেশির গড়ন, রক্ত চলাচলে সাহায্য করার মতো একাধিক উপকার রয়েছে। তবে নারকেল তেল ও অলিভ তেল শিশুর ত্বকের জন্য বেশি ভাল।

আগে বলা হত, জন্মের পরে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত তেল না মাখাতে, স্নান না করাতে। মায়ের প্লাসেন্টা থেকে বেরোনোর পরে নবজাতকের ত্বকে ভারনিক্স স্কেসিওসা বলে একটি স্তর থাকে। সেই জন্যই তেল-সাবান দিতে নিষেধ করা হত। কিন্তু এখন ধারণা বদলে গেছে। এখন বরং চিকিৎসকরা শিশুকে তেল, সাবান মাখিয়ে গোসল করাতে বলেন। কারণ, পরিচ্ছন্নতাই চর্মরোগকে দূরে রাখার শ্রেষ্ঠ উপায়।

সূত্র: আনন্দবাজার

এএমপি/এএসএম