মাকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ছেলে প্রাণ হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর মারা গেলেন মা-ও। এমন দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে গেছে। ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না পরিবারের কেউ। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Advertisement
শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফেনী শহরের গোডাউন কোয়ার্টার রেলক্রসিং এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান ছেলে হাফিজুল ইসলাম (৪২)। গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মা ফাতেমাতুজ জোহরারও মৃত্যু হয়।
নিহত হাফিজুল ইসলাম ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পাঠানগড় গ্রামের মিয়াজী বাড়ির হারেস আহম্মেদের বড় ছেলে। নিহত ফাতেমাতুজ জোহরা হারেস আহম্মেদের স্ত্রী ও হাফিজুলের মা।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গোডাউন কোয়ার্টার এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যানজটে আটকে পড়ে। এসময় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাফিজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার মাকে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। মারাত্মক আহত অটোরিকশার চালককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন মাকে ডাক্তার দেখাতে এসে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেলো ছেলেরনিহতের আরেক ছেলে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, মাকে ডাক্তার দেখিয়ে বড় ভাই ফেনী থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আকস্মিক এমন দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে গেছে। কিছু বলার মতো ভাষা নেই।
নজরুল করিম নামে নিহতের এক স্বজন বলেন, হাফিজুল ইসলাম আগে রাজধানীর একটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। পরবর্তী ফেনীতে এসে ব্যবসা করতেন। অসুস্থ মাকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেনী থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, নিহত হাফিজুল ইসলামের মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নেওয়ার পর সেখানে তার মা মারা যান। আহত সিএনজিচালক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Advertisement
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমএন/জিকেএস