রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সব সংসদ সদস্য ভোট দেবেন- ঐকমত্য কমিশনে এমন প্রস্তাব বিএনপি করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা ৭০ অনুচ্ছেদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব এনেছি এবং সব দল একমত হয়েছে। আমরা আরেকটি প্রস্তাব করেছি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে উভয় পক্ষের এমপিরা স্বাধীনভবে ভোট দেবেন। সেটা আরেকটা বিপ্লব হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ঐক্যের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর করার সিদ্ধান্তে একমত হয়েছি, এটাও বড় ধরনের অর্জন নয়? আমরা যদি প্রতি ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগকে সীমাবদ্ধ করি, আইনিভাবে, সাংবিধানিকভাবে- তাইলে কিন্তু নির্বাহী বিভাগ দুর্বল হবে। তখন রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা করা যাবে না। নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইনসভা যার যার সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে কাজ করতে পারে- সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করলে প্রকৃতপক্ষে সংস্কার হবে। আমরা এমন সংস্কার চাই।
Advertisement
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকতে হবে- সেজন্যই আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যদি সত্যিকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে, এখানেই কিন্তু স্বৈরাচারের উৎপত্তিটা বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনজনগণের টাকায় আলোচনায় বসে ফল না এলে সেটি হবে হতাশাব্যঞ্জকতোষামোদি করতে বিএনপির কিছু নেতা তারেক রহমানকে মাস্টারমাইন্ড বলছেনবিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, নির্বাহী বিভাগকে খর্ব করার মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো দাঁড় করানো যাবে না। নির্বাহী বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে। বিচার বিভাগ ও আইনসভাকে তাদের নিজ নিজ কাজ করতে দিতে হবে। আর সেখানে থাকবে শক্তিশালী চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স, সেপারেশন অব পাওয়ার ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, অতীতে একজন সরকার হয়েছিল বলে আমরা নির্বাহী বিভাগকে বিলুপ্তি করতে পারবো না। আমাদের চেষ্টা করতে হবে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স এবং একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে শক্তিশালী করার।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, শুধু আর্টিকেল ৯৬ এর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল দিয়ে যথেষ্ট নয়, বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে যথাযথ আইন থাকা জরুরি। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছ নিয়োগ এবং প্রেসের স্বাধীনতাই গণতন্ত্রের প্রকৃত রক্ষাকবচ।
Advertisement
তিনি বলেন, যে দেশে ফ্রিডম অব প্রেস শতভাগ, সেই দেশে গণতন্ত্র শতভাগ— এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে একীভূত জাতীয় দর্শন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই কল্যাণ রাষ্ট্র চাই, বৈষম্যহীন, মানবিক মর্যাদাভিত্তিক সমাজ চাই, গণতান্ত্রিক শক্তিশালী রাষ্ট্র চাই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ১২ দলীয় জোটপ্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুল, শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।
এএএম/কেএসআর/জেআইএম