কৃষি ও প্রকৃতি

কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ, তলিয়েছে ফসলি জমি

কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ, তলিয়েছে ফসলি জমি

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে দেশের ২১টি জেলায় মাঠে থাকা আউশ, আমন বীজতলা, বোনা আমন, পাট, শাক-সবজি, ফলের বাগান, পান, তরমুজ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যার পানিতে শুধু কৃষকের ফসল আর ঘর-বাড়ি নয়; ভেসে যায় মানুষের জীবন, স্বপ্ন আর ভবিষ্যৎ! এ যেন এক নিষ্ঠুর পুনরাবৃত্তি। বছরের পর বছর একই দৃশ্য। তবে নেই কোনো প্রস্তুতি বা টেকসই সমাধান।

Advertisement

প্রতিবারই আমরা প্রস্তুত নই। প্রতিবারই হাজার পরিবার সব হারিয়ে ফেলে। ত্রাণ নয়, পরিত্রাণ চাই। মাঠে থাকা প্রায় ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যা বৃহস্পতিবার রাতে কৃষি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়।

ক্ষতিগ্রস্ত ফসল ও জমির পরিমাণ মাঠে থাকা আউশ, আমন বীজতলা, বোনা আমন, পাট, শাক-সবজি, ফলের বাগান, পান, তরমুজ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা এসব ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ নিচে তুলে ধরা হলো: আউশ ধান ৪৪,৬৬২ হেক্টর, আমন বীজতলা ১৪,৩৯৩ হেক্টর, বোনা আমন ২৯৭ হেক্টর, শাক-সবজি ৯,৬৭৩ হেক্টর, পান ৩৮৭ হেক্টর, পাট ১৩৫ হেক্টর, কলা ১১৪ হেক্টর, পেঁপে ২৯৩ হেক্টর, মরিচ ১০৪ হেক্টর, ২৮১ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন তরমুজসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন আকাশমণি-ইউক্যালিপটাসের চারা ধ্বংসে অভিযান শুরু পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা কতদূর?

বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাকুমিল্লা ১১,৫৯০ হেক্টর (আউশ, আমন, শাক-সবজি, মরিচ, আখ), নোয়াখালী ৭,৮০৬ হেক্টর (আউশ, আমন, তরমুজ), ফেনী ১,৬৫৫ হেক্টর (আউশ, আমন, শাক-সবজি, মরিচ)। এ ছাড়া কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালি, বরগুনা, ভোলা এবং শরীয়তপুর জেলার ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

আবহাওয়ার কারণ ও পরিস্থিতি বৃষ্টি হচ্ছে মূলত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে। এতে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে কোথাও কোথাও অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে লক্ষ্মীপুর (রামগতি) ৮৫ মিলিমিটার, গোপালগঞ্জ ৮০ মিলিমিটার, বাঘাবাড়ি (রাজশাহী) ৭৩ মিলিমিটার, আরিচা ৭১ মিলিমিটার।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস আবহাওয়াবিদ তারিফুল নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকার লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিশে গেছে। ফলে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। শুক্রবার থেকে ধীরে ধীরে আবহাওয়া উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে শুক্রবারও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া দেখা গেছে। এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়া না থাকায় চারটি সমুদ্রবন্দরের সতর্কতা সংকেত তুলে নেওয়া হয়েছে।

এসইউ/এএসএম

Advertisement