বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সালাম বলেছেন, একটা সমাজে আমরা বসবাস করি। ভালো মন্দ থাকবেই। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই ভালোও আছে, মন্দও আছে। যে মন্দটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই ভালো হয়। আর যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সে খারাপ হয়।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গাউছিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় আয়োজিত ‘মাদক সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে ইমাম সমাজের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আবদুস সালাম বলেন, ঢাকা শহরের সবচেয়ে বেশি মাদরাসা মোহাম্মদপুরে। আর মাদরাসা যেহেতু আছে তাহলে মসজিদও আছে সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে বেশি স্কুল ও কলেজ আছে। এই সম্পূর্ণ ঢাকা শহরে এত মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল ও কলেজ কোনো এলাকায়ই নেই।
কিন্তু এত কিছুর পরেও সবচেয়ে বেশি মাদকাসক্ত এখানে, সবচেয়ে বেশি কিশোর গ্যাং এখানে, সবচেয়ে বেশি খারাপ মানুষ এখানে। একটা জায়গায় একটা ফুলের বাগান থাকবে সেই বাগানের ফুলের সুঘ্রাণে আশপাশের এলাকার মানুষের মন আরও সুন্দর হবে। কিন্তু সেই জায়গায় এই এলাকা কেন এমন? এ অবস্থা এই কারণেই যে আমরা সবাই যার যার থেকে বিচ্ছিন্ন আছি। আমরা তো একটা স্বাভাবিক মানুষ। একটা সমাজে আমরা বসবাস করি। ভালো মন্দ থাকবেই। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই ভালোও আছে মন্দও আছে। যে মন্দটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই ভালো হয়। আর যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সে খারাপ হয়।
Advertisement
কিন্তু হুজুরের পাশে যদি খারাপ থাকে সেই দায়টা কিন্তু হুজুরকে বহন করতে হবে। সেই জায়গায় এদের (খারাপ মানুষদের) প্রতিরোধ করতে হবে আমাদের। গত ১৭ বছর এটা আমাদের সম্ভব ছিল না। এই ১৭ বছরে দেশটাকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে গেছে। সর্বপ্রথম মানুষের বিবেক বুদ্ধির ওপর আঘাত করা হয়েছে। মানুষ যাতে ইমান নিয়ে বসবাস করতে না পারে। সবাইকে মিথ্যাবাদী বানিয়ে দিয়েছে। মিথ্যা ছাড়া চাকরিও হয়নি। এক ব্যক্তির বয়ান ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়নি। এজন্য মানুষ মিথ্যা বলতে বাধ্য হয়েছে।
এই দেশে সবকিছু আসে প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সীমান্তগুলোতে আজ গরু কারবারিদের হত্যা করা হয়। কোনোদিনও শুনেছেন একজনও মাদক কারবারিকে হত্যা করা হয়েছে। কোথাও গ্রেফতার করা হয়েছে, হয়নি। অথচ সবকিছুই সীমান্ত থেকেই আসছে আমাদের এখানে। অর্থাৎ তারা চায় এই দেশের মানুষগুলো নষ্ট হয়ে যাক। কারণ তাদের বিবেক বুদ্ধি সচেতনতা সব নষ্ট হয়ে যাক, ধ্বংস হয়ে যাক। এগুলো কারা করে? আলেম ওলামারা করে? গত ১৭ বছর আলেম ওলামারা টুপি পরে ওয়াজ মাহফিলও করতে পারেননি। মসজিদে জুমার নামাজের খুতবাও দিতে পারেননি। সেটাও তারা বলে দিতো যে খুতবায় কি বলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আক্তারুজ্জামান এবং আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা। তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে আমাদের প্রতিটি বক্তব্য ভিডিও ধারণ করা হতো, মনের ভেতরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনেক কথা থাকলেও প্রকাশ্যে বলার সুযোগ পেতাম না, সমাজ পরিবর্তনের জন্য অবশ্যই ইমাম সাহেবরা ভূমিকা রাখবেন।
Advertisement
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান বলেন, সমাজের তিন শ্রেণির মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে সমাজ থেকে সব সমস্যা দূর করা যায়, তারা হলেন শিক্ষক, ইমাম ও রাজনীতিবিদরা। ইমাম সাহেবরা হলেন সমাজের স্তম্ভ তারাই সবচেয়ে বেশি সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারেন।
জেএইচ/জেআইএম