রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চলমান জাতীয় বৃক্ষমেলায় গাছপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নানা বয়সী মানুষ ছুটে আসছেন গাছ কিনতে ও দেখতে।
Advertisement
মেলা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত ৪ দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে মেলায় তেমন লোকজন হয়নি। আজ শুক্রবার থাকায় ও বৃষ্টি কমে যাওয়ায় মানুষের ভিড় বেড়েছে। এ অবস্থায় আজ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার বিক্রির আশা করছেন তারা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বৃক্ষামেলা ঘুরে দেখা গেছে, জুমার নামাজের পর থেকে মেলা প্রাঙ্গণে বেড়েছে জনসমাগম। কেউ এসেছেন ইনডোর প্ল্যান্ট কিনতে, কেউ ফুল ও কাঠ, কেউ বা আবার এসেছেন ফলজ ও ঔষধি গাছের খোঁজে। অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে দেখেছেন বাহারি গাছের সমারোহ।
তরুণদের মধ্যে ইনডোর প্ল্যান্টস, যেমন- মানি প্ল্যান্ট, স্নেক প্ল্যান্ট, সাকুলেন্ট, ক্যাকটাসের প্রতি ছিল বাড়তি আগ্রহ। অন্যদিকে, বয়স্করা খুঁজেছেন লেবু, আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জামরুলসহ নানা ফলজ গাছ। নারীদের অনেকে কিনছেন চুইঝাল, মশলা, বনজ ও ঔষধি গাছ।
Advertisement
মালিবাগ থেকে গাছ কিনতে এসেছেন আজহারুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকায় ভাড়া থাকি। বাসায় ছোট্ট একটা বারান্দা আছে। একটা লেবু গাছ আর কিছু ইনডোর প্ল্যান্টস নিয়েছি। পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে বাগান করার ইচ্ছা ছিল।
মেলায় নার্সারির মালিক ও বিক্রয়কর্মীরা জাগো নিউজকে জানান, গত কয়েকদিন বৃষ্টিতে মানুষ কম এসেছে। আজ ছুটির দিন, অন্যদিকে বৃষ্টিও নেই। ফলে মানুষের ভিড় বাড়ছে, বেচাকেনাও হচ্ছে।
ইব্রাহিম নার্সারীর ইব্রাহিম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আগের চেয়ে বৃক্ষপ্রেমী বাড়ছে। কিন্ত আমাদের শহরে গাছ লাগানোর পর্যাপ্ত জায়গাও নেই। কেউ ছাদেও আলাদা রুম করে ভাড়া দিচ্ছেন, কেউ বা আবার পুরো ছাদ জুড়ে বাগান করছেন। অনেক বৃক্ষপ্রেমী আছেন যাদের গাছ কেনার প্রবল ইচ্ছা। কিন্ত জায়গার অভাবে তারা কিনতে পারছেন না।
মেলার আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারের মেলা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বড় পরিসরে হচ্ছে। মানুষের উপস্থিতিও ভালো। বাহারি রকমের গাছে মানুষও আকর্ষিত হচ্ছে। বৃষ্টির বাগড়া না থাকলে এই কয়েকদিনে মেলা জমে উঠবে।
Advertisement
মেলায় বন অধিদপ্তরের লাইব্রেরিয়ান শাহেনা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের সর্বশেষ হিসেব অনুয়ায়ী ৯ তারিখে ২১ লাখ টাকার গাছ বিক্রি হয়েছে। গত ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ৬ লাখ ৬২ হাজার ৫৮১ টি চারা বিক্রি হয়েছে। আজ দর্শনার্থী বেড়েছে। আজকেও আশা করি অনেক গাছ বিক্রি হবে। অনেকে মেলার সময় বাড়ানোর অনুরোধ করছেন। আমাদের কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে এই বিষয়ে জানাবেন।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে মেলা চলাকালীন একজন ডাক্তার রয়েছেন। অনেকে দর্শনার্থী ও বিক্রয়কর্মী অসুস্থ হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জানা গেছে, এবারের মেলায় ১৩৫টি নার্সারি অংশ নিয়েছে। স্টলে স্টলে গাছের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে মাটি, টব, জৈব সারসহ বাগান করার নানা উপকরণ। পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি- স্লোগান নিয়ে গত ২৫ জুন বৃক্ষমেলা শুরু হয়। আগামী ২৪ জুলাই মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। মেলা চলছে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
আরএএস/এএমএ/এএসএম